৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পরকিয়ার জের, চারজনকে কুপিয়ে হত্যা

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হিলি সীমান্ত সংলগ্ন ভীমপুর আদিবাসী পল্লীতে চাপাতির কোপে খুন হয়েছেন চারজন। শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোরে সুমন হেমরন নামের একজনকে আটক করেছে পাঁচবিবি থানার পুলিশ।

নিহত চারজন হলেন সুমনের ছেলে সানি হেমরন (৭), শাশুড়ি সন্ধ্যারানী মার্ডি (৪৯),  শ্যালিকা তেরেজা মার্ডি (১৮), ফুফা শ্বশুর মারকেল হেমরন (৫৩)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন সুমনের স্ত্রী শশীলা মার্ডি।

‘অন্য ছেলের সঙ্গে’ স্ত্রীর সম্পর্ক থাকায় এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সুমন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার  রাতে  সুমন কর্মস্থল ঢাকা থেকে আসার পর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া ও বাদানুবাদ হয়। বাদানুবাদের একপর্যায়ে সুমন চাপাতি দিয়ে স্ত্রী শশীলা মার্ডিকে (২৯) আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর তিনি একে একে নিজের শিশু সন্তান, শাশুড়ি, শ্যালিকা ও ফুফা শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ ভীমপুর আদিবাসী পল্লীতে গিয়ে সুমন হেমরনকে আটক করে এবং নিহতদের লাশ উদ্ধার করে  ময়নাতদন্তের জন্য পাঁচবিবি থানায় নিয়ে যায়।

আহত  শশীলা মার্ডিকে  উদ্ধার করে প্রথমে তাকে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  ভর্তি  করা হয়। সেখান থেকে তাঁকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটায় পরে তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  স্থানান্তর করা হয়।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, নিহতরা সবাই আদিবাসী পরিবারের সদস্য। কী কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা এখনই  নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে স্ত্রী শশীলা মার্ডির পরকীয়ার কারণে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে আটকের পর এনটিভির ক্যামেরার সামনে খুনের ব্যাপারে  সুমন হেমরন বলেন, ‘পাঁচজনকে খুন করেছি। শাশুড়ি, ফুফাশ্বশুর, বউ, শালী তারপর বড় ছেলে।’

‘অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আমার স্ত্রীর, শ্বাশুড়ি সাপোর্ট দিত। অনেক বলতাম, কিন্তু শোনে না। না শুনলে আমি বাদ দেই , ডিভোর্স করি। এতেও রাজি না, খালি প্যাঁচায়। কারণ আমি গরিব। ছোটবেলায় মা  মারা গেছে, আর বাবা অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে’- দাবি করেন সুমন।

সুমন হেমরন জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার নওয়ানা গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১১ বছর আগে তাঁর সঙ্গে হিলি সীমান্ত সংলগ্ন ভীমপুর আদিবাসী পল্লীর ফনি মাস্টারের মেয়ে শশীলা মার্ডির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও  এক মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। এর মধ্যে বড় ছেলে সানি এ ঘটনায় খুন হয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ