সৌদি আরবের অন্তত পাঁচ লাখ কূটনৈতিক নথি ফাঁস করবে বলে জানিয়েছে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস। এর মধ্যে ৬০ হাজার নথিই উইকিলিকসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে, যার বেশির ভাগ আরবিতে লেখা।
লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের আশ্রয় চাওয়ার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে এসব নথি ফাঁস করা হলো বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে উইকিলিকস। এসব নথির সত্যতা যাচাইয়ের দ্রুত কোনো পদ্ধতি না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে উইকিলিকস ব্যাপক আকারে এ ধরনের বিভিন্ন সরকারি নথি ফাঁস করে আসছে।
সৌদি সরকারের ফাঁস হওয়া এসব নথির বেশির ভাগের ওপরই সবুজ রঙের চিহ্ণ সংবলিত ‘সৌদি প্রজাতন্ত্র’ অথবা ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়’ লেখা রয়েছে। এ ছাড়া কিছু নথির ওপর ‘জরুরি’ বা ‘বিশেষ শ্রেণি’ চিহ্ণিত করা রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত একটি রয়েছে যা ওয়াশিংটনের সৌদি আরবের দূতাবাস থেকে বের হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, এই নথিগুলো যদি সত্যি হয় তাহলে একটি ‘ডাকসাইটে’ কিন্তু ‘অস্বচ্ছ’ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গোপন তথ্য প্রকাশ্যে আসবে। এই ফাঁসের মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে রিয়াদের দীর্ঘদিনের শত্রুতা, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের এবং মিসরের সেনাসমর্থিত সরকারকে সমর্থন দেওয়াসহ রাষ্ট্রটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্বন্ধে জানা যাবে।
২০১২ সালের একটি নথি থেকে ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা নিয়ে সৌদি আরবের সন্দেহ প্রবণতা সম্পর্কে জানা যায়।
২০০৮ সালের ১৪ আগস্টের ফাঁস হওয়া একটি বার্তায় লেখা ছিল, ‘শ্রেণিবদ্ধ এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ।’ এই বার্তায় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনের সৌদি দূতাবাসকে সাবধান করে দিয়ে জানায়, সৌদি আরব ও উপসাগরীয় কিছু দেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল দূতাবাস পরিদর্শনে যাবেন।
ওই বার্তায় বলা হয়, ‘সেখানে তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনবেন, প্রশ্ন করবেন এবং ছবি তুলবেন।’ এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সময়মতো তথ্য দিতে দূতাবাসকে নির্দেশ দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আরো ডজনখানেক প্রশাসনিক তথ্য ও ইমেইল ফাঁস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এপি।
এরই মধ্যে টেলিফোনের মাধ্যমে বেশ কিছু নথির সত্যতা নিশ্চিত করেছে এপি। এসব তথ্য-উপাত্ত আসল বলে বার্তা সংস্থাটিকে নিশ্চিত করেছেন উইকিলিকসের মুখপাত্র ক্রিস্টিন র্যাফনসন।
তবে কীভাবে এসব সংগ্রহ করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি উইকলিকস কর্তৃপক্ষ। নীতিগতভাবে তথ্যের উৎস তারা জানাতে পারেন না বলেও জানিয়েছেন ক্রিস্টিন।