মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের নৃশংস ফেক ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি চক্র। রুয়ান্ডা, কঙ্গো, শ্রীলঙ্কা, চীন এবং নেপালসহ বিভিন্ন দেশে সংঘটিত নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার ছবি এবং ভিডিও ফুটেজকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বলে উল্লেখ করে চলছে এ প্রচারণা। পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে জামায়াত-শিবির পরিকল্পিতভাবে এসব ছড়াচ্ছে। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে একটি ছবিকে কেন্দ্র করে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে যায় কক্সবাজারের রামু, উখিয়া এবং চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল বৌদ্ধদের প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী ২০টির বেশি মন্দির। পাশাপাশি পুড়িয়ে ফেলা হয় অর্ধশত বাড়ি ঘর। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আবারও শুরু হয়েছে একই ধরণের ষড়যন্ত্র। ফেসবুকে শ্রীলঙ্কায় তামিলদের বিরুদ্ধে চলা সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত, আফ্রিকার দেশ কঙ্গো এবং রুয়ান্ডায় ভূমিকম্পে ও আগুনে হতাহতদের ছবি রোহিঙ্গাদের ছবি বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সম্প্রতি নেপালে নিহতদের সৎকারের ছবিও বাদ যায়নি। এমনকি তিব্বতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে চীনের সেনাবাহিনীর ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের প্রফেসর ড. গাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ধর্মীয় বিষয়গুলো এনে জামায়াত-শিবির দাঙ্গা লাগাতে পারে বা এ ধরনের কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। এগুলো তারা চেষ্টা করছে।’
আর বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া মনে করেন, ‘মুসলিম ভাইদের সাথে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই এসব অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
এক্ষেত্রে পুলিশের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে কক্সবাজারের রামুতে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির জন্য যারা উস্কানি দিয়েছিল, ঠিক সে চক্রই বর্তমানে রোহিঙ্গা ইস্যুতেও দেশে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল জানান, ‘ফেসবুকে এসব ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবো।’
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, মূলত জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি সমর্থিতদের ফেসবুক থেকেই এসব ছবি আপলোড করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এমনকি ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের হেফাজতের ঘটনার পরও এ ধরণের ছবি ব্যবহার করে নানা ধরণের উস্কানি দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা।
























