ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা ও তিস্তা চুক্তিসহ বেশ কিছু দাবিতে এবং মোদির সফরের বিরোধিতা করে বামপন্থী কয়েকটি সংগঠন মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ সাত নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
শনিবার বিকালে মিছিল শুরু করার আগেই রাজধানীর তোপখানা রোড এলাকার বাসদ (মার্কসবাদী) দলের কার্যালয়ের নিচ থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।
প্রায় একই সময়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মোদির সফরের বিরোধিতা করে সমাবেশের প্রস্তুতি শুরুর পরপরই ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয় বামপন্থী চারটি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের। এ সময় পুলিশ সেখান থেকে চার নেতাকর্মীকে আটক করে বলে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
আটক নেতাকর্মীদের রমনা থানায় নেয়া হয়েছে বলে সংগঠনগুলোর নেতারা জানান।
তবে আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি রমনা থানার পুলিশ।
বাসদের (মার্কসবাদী) ঢাকা মহানগরের সদস্য ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্যসচিব কল্যাণ দত্ত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বাংলাদেশে-ভারতের মধ্যে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন, বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ বেশ কিছু ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর উপলক্ষে এসব ইস্যু নিয়ে আমরা মিছিল করতে চেয়েছিলাম। আমরা আমাদের বক্তব্যগুলো বলতে চেয়েছিলাম। শনিবার বিকেল ৪টায় মিছিলের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বেলা সাড়ে ৩টা থেকেই আমাদের তোপখানা রোডের কার্যালয়ের নিচে অবস্থান নেয় পুলিশ। এরপর মিছিলের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য প্রথম দফায় আমাদের পাঁচ নেতা-কর্মী ভবনের নিচে নামলে সেখান থেকেই তিনজনকে আটক করা হয়। আরো দুজনকে আটকের চেষ্টা করলেও আমরা তাদের পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে কার্যালয়ের ভেতরে টেনে নিয়ে আসি।”
কী কারণে আটক করা হচ্ছে তা বারবার জানতে চাইলেও পুলিশ সদস্যরা কোনো উত্তর দেননি বলেও অভিযোগ করেন কল্যাণ দত্ত।
তিনি জানান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা ও ইডেন কলেজ ছাত্রফ্রন্টের সদস্য সায়মা আফরোজ বীথিকে পুলিশ আটক করেছে।
একই সময় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চা, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ ও জাতীয় গণফ্রন্ট।
জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের আহ্বায়ক মাসুদ খান বলেন, “আগ্রাসী ভারত রাষ্ট্রের প্রতিনিধি নরেন্দ্র মোদি ফিরে যাও, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপ রুখে দাঁড়ান, এই স্লোগানে আজ বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে চারটি সংগঠনের সমাবেশ ও মিছিলের সময় নির্ধারিত ছিল। যখন আমরা সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন পুলিশ আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেখান থেকে নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, সদস্য জাকির সুমন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সদস্য মহিউদ্দীন আহমেদ ও দীপা মল্লিককে আটক করে পুলিশ।”
আটক নেতাকর্মীদের রমনা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান মাসুদ খান।
এ বিষয়ে জানতে রমনা থানায় ফোন করা হলে থানার ডিউটি অফিসার সাইফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ রকম কিছু পাইনি। এ রকম কাউকে থানায় আনা হয়নি।’