বন্দর নগরীতে স্বতন্ত্র গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা’তে এ পল্লী গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। এর অংশ হিসেবে আনোয়ারা বিশেষ শিল্প জোনে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে ৫’শ একর জায়গা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এর আগে নগরীতেই সরকারি খাস জায়গা বরাদ্দ চেয়েছিল তারা।
নগরীর কিংবা নগরীর আশপাশে গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তোলার জন্য সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএ’র কাছে বার বার ধর্না দিয়েছে বিজিএমইএ নেতারা। চাহিদা অনুযায়ী জায়গা বরাদ্দের ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। এর মূল কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে নগরীতে জমির মূল্য অনেক বেশি। এ অবস্থায় শহরের পরিবর্তে আশপাশে এ গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তোলার ব্যাপারে মত দিচ্ছেন সিডিএ চেয়ারম্যানসহ নগর বিশেষজ্ঞরা।
আর নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান মনে করেন, ‘যে জায়গাগুলোতে চাষাবাদ হচ্ছে না, সে জায়গাগুলোকে যদি পরিকল্পনা মাফিক একটি গার্মেন্টস পল্লী হিসেবে গড়ে তোলা যায় তাহলে দু’টো লাভ হবে। এক শহরের উপর চাপ কমবে, দুই পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।’ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘গভর্নমেন্ট সাবসিডিয়ারির মাধ্যমে জমি দেয়ার মালিক হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সিডিএ কিংবা সিটি কর্পোরেশন নিতে হলে সরকারি মূল্যে জায়গার দাম পরিশোধ করতেই হবে।’
নগরীতে বর্তমানে পুরোদমে উৎপাদনে রয়েছে প্রায় ৭’শ গার্মেন্টস কারখানা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ক্রেতাদের আন্তর্জাতিক জোট ৩’শ কারখানাকে ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তা দ্রুত সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। এ অবস্থায় ছোট ছোট করে হলেও বিশেষ জোন গড়ে তোলার মত দিচ্ছেন বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং ইটিপি থাকবে এরকম পূর্ণাঙ্গ শিল্প এলাকা যদি তৈরি হয়, তাহলে সেই শিল্প প্লট বাজার দরে কেনার জন্য এখন বিনিয়োগকারীরা তৈরি আছে।’ এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের মীরসরাই এবং আনোয়ারায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিশেষ শিল্প জোন। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগের সুবিধা থাকায় আনোয়ারার শিল্প জোনে গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তুলতে চায় বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের জন্য সুবিধাজনক জায়গা হচ্ছে আনোয়ারা। সেটা যদি হয় তাহলে আমাদের বন্দর, শিপমেন্ট, মালামাল তোলা, কর্মচারী পাঠানো সব সহজ হয়ে যাবে।’ চট্টগ্রামের গার্মেন্টস কারখানাগুলো নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারণে শ্রমিকদের পরিবহনে সমস্যা হয়। অন্যদিকে এসব গার্মেন্টস কারখানা এবং শ্রমিকদের সামাল দিতে প্রায়ই সমস্যায় পড়তে হয় প্রশাসনকে।