২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয় গত বৃহস্পতিবার। এই বাজেটে মোবাইলের সব ধরনের সেবার ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মহিত। এ বাজেট সংসদে আলোচনার পর আগামী ৩০ জুন পাস হওয়ার কথা।
কিন্তু গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন মোবাইল গ্রাহক গভর্মেন্ট ইনফো নামের একটি সেবা থেকে একটি ক্ষুদে বার্তা পান। যাতে লেখা হয়েছে- মোবাইলের সব ব্যবহারের উপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা আপনার সকল মোবাইল রেটের সাথে প্রযোজ্য হবে।
এরপর থেকেই গ্রাহকদের সব রকম মোবাইল সেবার ওপর বাড়তি ৫ শতাংশ করে অর্থ কাটা শুরু হয়।
শুধু গভর্মেন্ট ইনফো নয় মোবাইল অপারেটরগুলোও তাদের গ্রাহকদের কাছে একই রকম ক্ষুদে বার্তা পাঠানো শুরু করেছে।
গ্রামীণ ফোনের ক্ষুদে বার্তায় বলা হয়েছে- মোবাইল ফোন ব্যবহারে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যা আপনার সকল ধরনের মোবাইল ব্যবহারের ওপর প্রযোজ্য হবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলালিংক, গ্রামীণ ও রবি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বাজেট উত্থাপনের দিনই (বৃহস্পতিবার) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্পূরক শুল্ক আরোপের বিশেষ প্রজ্ঞাপন (এসআরও) জারি করে। সেদিন অপারেটরদের কাছে এটি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপরই অপারেটররা গ্রাহকদের ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দিচ্ছে যে, তাদের মোবাইল সেবার ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ শুরু হয়েছে।
অর্থাৎ এখন থেকে গ্রাহকদের ১০০ টাকার মোবাইলের সেবা ব্যবহারে আগের ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) সঙ্গে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে। অর্থাৎ গ্রাহক ১০০ টাকায় ২০ টাকা কর দেবে।
এছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর ১ শতাংশ হারে সারচার্জ থাকলেও তা এখনই কাটা হচ্ছে না। যদিও গত ৩০ মার্চ মন্ত্রিসভায় এ আইনিটি অনুমোদন পেয়েছে। জাতীয় সংসদে পাসের পর এ আইনটি কার্যকর হবে। তখন গ্রাহককে আরো বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবে। অর্থাৎ ১০০ টাকায় ২১ টাকা কর দিতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল ফোনের সেবায় ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল সিমের শুল্ক হার ৩০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা করার প্রস্তাব রাখেন অর্থমন্ত্রী। শুক্রবার বাজেটোত্তোর এক সংবাদ সম্মেলনে মুহিত বলেন, ‘সবার দেয়ার সামর্থ আছে সেই বিশ্বাসেই মোবাইল ব্যবহারের ওপর কর ধরা হয়েছে।’
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাব অনুসারে, গত এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৪৭ লাখ। এরমধ্যে ৪ কোটি ৪২ লাখ গ্রাহক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।