প্রতিবছর দেশের মোট জনসংখ্যার সাথে প্রায় ২০ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। সে হিসেবে প্রতি এক দশকে দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে প্রায় ২ কোটি করে। জনসংখ্যার এই উর্ধ্বচাপ মূলত দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৮০ এবং ৯০ এর দশকের মত পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে মাঠকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা প্রদান কার্যক্রম এবং প্রচার-প্রচারণা এখন আর নেই। সামাজিক সুরক্ষার অভাবেই নিম্ন আয়ের এসব মানুষের বেশি সন্তান নেয়ার প্রবণতা কমানো যাচ্ছেনা বলে মনে করেন তারা। রাজধানীর বস্তিতে বসবাসকারী এই নারী সদ্য তৃতীয় সন্তানের মা হয়েছেন। অথচ আগের দুই সন্তানেরই ঠিকমত ভরণ পোষণ দিতে পারছেন না তিনি।
দারিদ্র, অসচেতনতা আর শিক্ষার অভাবে নিম্ন আয়ের এসব মানুষের অধিকাংশের ঘরেই রয়েছে ৩ থেকে ৫ জন সন্তান। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৯১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ১১ কোটি। দুই দশক পর যা এসে ঠেকেছে প্রায় ১৫ কোটিতে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বগতি চলতে থাকলে ২০২১ সালে তা ১৯ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞের মতে, জনসংখ্যার এই ঊর্ধ্বচাপ দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের সহেযাগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের জনসংখ্যায় ১৮ থেকে ২০ লক্ষ মানুষ যোগ হচ্ছে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করা গেলে তারা আমাদের দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে।’ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নূর হোসেন তালুকদার স্বীকার করলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি ঠিকভাবে কাজ না করায় থামানো যাচ্ছেনা জনসংখ্যার এই চাপ।
নিম্ন আয়ের এসব মানুষের জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণা কার্যক্রমে দ্রুত গতিশীলতা আনা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।