
চিনির দাম বেড়েছে। ভোগ্যপণ্যের বাজারে দুই-আড়াই মাস পর কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে চিনির দর। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পণ্যটির দাম বেড়েছে মণে প্রায় ৫০ টাকা। চাহিদা ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে দেশে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে পাইকারিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ১ হাজার ২৪০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও একই মানের চিনির দাম ছিল ১ হাজার ২০০ টাকার নিচে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবেই মূলত চিনির দাম বেড়েছে। দীর্ঘ তিন-চার বছর নিম্নমুখী থাকার পর ১৫ দিন থেকে বিশ্ববাজারে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বেড়ে যাওয়ায় এক সপ্তাহ থেকে দেশেও পণ্যটির দাম বেড়েছে। এর আগে রমজান থেকে কোরবানির ঈদ পর্যন্ত টানা তিন মাস খাতুনগঞ্জে পণ্যটির দাম নিম্নমুখী ছিল।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে নিম্নমুখী থাকলেও বাড়তি চাহিদা, সরবরাহ সংকট, কর বৃদ্ধির গুজবসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশীয় বাজারে চিনির দাম ওঠানামা করে। সর্বশেষ রমজান শুরুর আগে কিছুটা বাড়লেও তিন মাস ধরে দেশীয় বাজারে পণ্যটির দাম ছিল নিম্নমুখী।
জানা যায়, গতকাল চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে প্রতি মণ সিটি গ্রুপের চিনি ১ হাজার ২৫০ টাকায় লেনদেন হয়। এছাড়া মণপ্রতি টিকে, এস আলম ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের চিনি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২৪০ টাকায়। গত সপ্তাহের শেষের দিকে এসব ব্র্যান্ডের মধ্যে সিটি গ্রুপের চিনি ১ হাজার ২০৫ ও অন্যান্য ব্র্যান্ডের চিনি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে হিসাবে মানভেদে পাইকারিতে চিনির দাম মণে ৫০ টাকা বেড়েছে।
চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকার চিনি ব্যবসায়ী রশিদ আহমেদ বলেন, রমজানের আগে কিছুটা বাড়লেও এর পর থেকে টানা নিম্নমুখী ছিল পণ্যটির দর। এর পর সাতদিন হলো পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ সময়ে চিনির দাম মণে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দরবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে ওই ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে পণ্যটির যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। এমনকি মিল ও গুদামে ব্যাপক চিনি মজুদ রয়েছে। শুধু আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বাড়ার অজুহাতে দেশে পণ্যটির দাম বাড়ছে।
এদিকে দু-তিন দিন থেকে পাইকারি বাজারের প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম নগরীর বাজার ও মুদি দোকানগুলোয় কোরবানির আগে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হতো ৩৬-৩৮ টাকায়। গতকাল একই মানের পণ্য ৩৮-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী, তিনদিনে খুচরায় চিনির দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের মুদি দোকানদার মাহফুজ উল্লাহ বলেন, পাইকারিতে এক সপ্তাহ ধরে দাম বাড়ছে চিনির। কিন্তু এর পরও গতকাল পর্যন্ত তার দোকানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৩৬ টাকায়। আগের কেনা চিনি মজুদ থাকায় কম দামে বিক্রি সম্ভব হচ্ছে। বাড়তি দামের চিনি দোকানে এলে কমপক্ষে ৩৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হবে।