বিদেশে, বিশেষ করে আমেরিকায় কোনও ভারতীয় যাতে কর ফাঁকি দিতে কিংবা করের নাগাল এড়িয়ে যেতে না পারে তার জন্য FATCA(ফরেন অ্যাকাউন্ট ট্যাক্স কমপ্লায়েন্স অ্যাক্ট) অনুসারে চুক্তিতে আবদ্ধ হল ভারত সরকার ও মার্কিন প্রশাসন।
এই চুক্তি অনুযায়ী কর-ফাঁকির বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং একে অন্যকে হুঁশিয়ার করতে পারবে দুই দেশ। আগামী পয়লা অক্টোবর থেকে এই চুক্তি কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার ভারতের রাজস্ব সচিব শক্তিকান্ত দাস ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড বর্মার উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি হওয়ার পর বর্মা জানান, ”কর ফাঁকি আটকাতে FATCA হল একটি যৌথ উদ্যোগ।” এর ফলে দু’দেশই লাভবান হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তথ্য আদান-প্রদানই আপাতত দু’দেশের মূল উদ্দেশ্য।
ভারতের রাজস্ব সচিব শক্তিকান্ত দাস বলেন, ”আমরা যৌথভাবে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি মার্কিন প্রশাসনকে। করের বিষয়ে স্বচ্ছতা আনতেই এই উদ্যোগ। মার্কিন আইন FATCA-র মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক আদান-প্রদানের সুযোগ আরও বাড়বে মনে করা হচ্ছে।
দুই দেশের সরকারের মধ্যে এই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের অর্থ সংস্থাগুলিকে মার্কিন প্রশাসনের কাছে সেদেশে কর্মরত বা ব্যবসারত ভারতীয়দের সম্পর্কে যাবতীয় কর সংক্রান্ত তথ্য দাখিল করতে হবে। যদি সেখানে দেখা যায়, কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা কর ফাঁকি দিয়েছে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সেখানকার প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
FATCA অনুসারে, যদি কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই আইনের ধারা মেনে করের হিসাব দাখিল না করে, তাহলে মার্কিন রাজস্ব প্রশাসন তার আমানত থেকে অন্তত ৩০ শতাংশ অর্থ পেনাল্টি বাবদ কেটে নেয়। সেক্ষেত্রে শুধু যে লভ্যাংশ থেকেই ওই পেনাল্টি রাজস্ব হিসেবে কেটে নেওয়া হয় তা নয়। ডিভিডেন্ড, আসল থেকে প্রাপ্ত সুদ, ফি, এমনকী বিক্রয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থ, সবকিছুর উপরেই পেনাল্টির ওই খাঁড়া নেমে আসে।
আসলে একটা সময়ে খোদ আমেরিকাকেও কালো টাকা সাদা করার কারবার প্রচণ্ড ভুগিয়েছিল। তারপর থেকেই সেখানকার কংগ্রেস এমন কিছু আইন পাশ করে, যার ফলে কোনও ধরনের ফেরেব্বাজেরই আর পরিত্রাণের উপায় নেই। ভারত সরকারও এখন আমেরিকার সেইসব পন্থা অনুসরণ করতে চাইছে বলেই তারা FATCA-য় সই করেছে।