‘আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করতে চাই আজ আমাদের চেয়েও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ভয়ঙ্কর রূপে আবির্ভুত হয়েছে করোনাভাইরাস। এসব দেশের কোন একটিকে কি আপনি দেখাতে পারবেন, যে দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার সকালে তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত আনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ যেসব দেশে টাক্সফোর্স হয়েছে সেগুলো চিকিৎসা তথা ভ্যাকসিন রিলেটেড, সেটা রাজনৈতিক কোনো টাক্সফোর্স নয়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপিকে গণমাধ্যমই আসলে বাঁচিয়ে রেখেছে। সরকার অনেক বেশি টিভি চ্যানেলের অনুমতি দিয়েছে বলেই বিএনপি তার অস্তিত্ব প্রকাশের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে। টেলিভিশন না থাকলে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে আরও গুরুত্বহীন হয়ে পড়তো।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার কি করেছে বা করছে তা বিএনপিকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখানোর প্রয়োজন নেই। আজ ইকোনোমিস্ট সহ প্রেস্টিজিয়াস আন্তর্জাতিক সাময়িকীগুলোতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তার সরকারের কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রচারে নয়, তিনি কাজে বিশ্বাসী। সরকারের ভুল হলে সংশোধনের পরামর্শ দিন। ভুল সংশোধনের গঠনমূলক পরামর্শ আর একপেশে সমালোচনা এক নয়। যেকোনো যুক্তিগ্রাহ্য পরামর্শ শেখ হাসিনা ইতিবাচকভাবে দেখেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সংকটে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি রাজনীতি নেতিবাচকতার বৃত্তে আবর্ত হচ্ছে। আমি আবারও বিএনপিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
১৭ এপ্রিল শুক্রবার করোনা ভাইরাস সংক্রামণের ব্যাপকতার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মহাদুর্যোগ’ মোকাবিলায় ‘জাতীয় টাস্কফোর্স’ গঠনের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি। এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চতুর্দিকে অন্ধকার ও হতাশা। করোনা দুর্যোগের নানামুখী প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে মনে হয়। এমতাবস্থায় এ পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে সুসমন্বিত ও সুবিবেচিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, ত্রাণ বিতরণ, বিভিন্ন সেক্টারে প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজ বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্যে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করছি।
তিনি আরো বলেন, এ টাস্কফোর্সে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করে এ টাস্কফোর্সকে অর্থবহ ও গতিশীল করার মাধ্যমে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। আমাদের লড়াই করতে হবে এবং সেই লড়াইয়ে অবশ্যই জয়ী হতে হবে।
টাস্কফোর্স গঠনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, এখন যে পরিস্থিতি টাস্কফোর্স গঠন করলে সুসমন্বিত, সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। নোভেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের ভাষায় কোনো খাদ্যের ঘাটতি নয়, খাদ্য বণ্টনে অনিয়ম, দুর্নীতি, সিদ্ধান্তহীনতা, সুশাসনের অভাব দুর্ভিক্ষের কারণ হতে পারে। তাই এখনই খাদ্য ও ত্রাণ বণ্টন এবং করোনার পরবর্তী পুনর্বাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ প্রক্রিয়াটিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।