[english_date]

কক্সবাজারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১

টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে, গাছের নিচে চাপা পড়ে কক্সবাজারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে সাত জন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুই জন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের বিভিন্ন সময় ও এসব ঘটনা ঘটে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এসে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মৃত ১১ জনের মধ্যে রামুতে পাহাড়ি ঢলে ছয় জন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঝড়ো হাওয়ায় গাছ চাপা পড়ে দুই জন, কক্সবাজার শহরে পাহাড় ধসে এক জন, পেকুয়ায় মায়ের কোল থেকে পড়ে এক শিশু ও চকরিয়ায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। কক্সবাজার ত্রাণ ও দুর্যোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলামেইলকে এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথে নৌকায় ডুবে রামু উপজেলার ফতেঁখারকুল ইউনিয়নের আমতলিয়া পাড়ার হালিমা বেগম, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মিতারছড়ার জাকির হোসেনের ছেলে রিদুয়ান, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের দক্ষিণ বিটের জিনু মিয়া, কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে আমির হোসেন, কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়ার সুলতানের মেয়ে খতিজা বেগম ও এরশাদ উল্লাহর মেয়ে হুমায়ারা বেগম মারা যান।

এছাড়া টানা বর্ষণে রামুর ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি। দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা এলাকায় সড়কের প্লাবিত হয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে, টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপে দেয়ালচাপায় কোনারপাড়া এলাকার নূর মোহাম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তাদের শিশু সন্তান মোহাম্মদ জিসান (৪) মারা গেছে।

সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার সকালে ঝড়ো হাওয়ায় ঘরের ওপর নারিকেল গাছ চাপা পড়ে মা ও শিশু মারা যায়। এতে আরও কয়েক জন আহত হন।

অন্যদিকে, শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের ঘোনায়পাড়ায় পাহাড় ধসে আবছার (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে শিশুটির মা’সহ ঘোনারপাড়ার জয়নাব বেগম, সাকের, আব্দুল মান্নান, উম্মে জামিলা, লাইটহাউজের শাকেরা খাতুন, ইসমত আরা বেগম ও সাহিত্যিকা পল্লীর ইয়াছির গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়া চকরিয়ায় লক্ষারচরে আনোয়ার হোসেন নামে এক বৃদ্ধ খাট থেকে পানিতে পড়ে মারা গেছেন।

এদিকে, চকরিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। এতে দেড় শতাধিক চিংড়ি ঘের, পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে চকরিয়া-বদরখালী সড়কে।

পেকুয়া নতুনপাড়া এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মায়ের কোল থেকে পড়ে আড়াই বছর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। এতে দেড় শতাধিক বসতবাড়ি ও অর্ধশত চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, কক্সবাজারে ৪৮ ঘণ্টায় ৬৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ৪৭ বছরে এমন বৃষ্টিপাত আর হয়নি। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বর্ষণ হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, বন্যা দুর্গতসহ দুর্যোগ কবলিত সব মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এসব মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। পাশপাশি ত্রাণ ও সুপেয় পানি বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ