গত মাসে মিয়ানমার উপকূল থেকে উদ্ধার হওয়া ৯ শতাধিক অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে অনেককে ফেরত আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পরিচয় যাচাই শেষে রোববার তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির বার্তা সংস্থা ইরাওয়াদ্দি অনলাইন বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
গত মে মাসের মাঝামাঝি মিয়ানমার উপকূল থেকে ২শ ৮ অভিবাসন প্রত্যাশীকে উদ্ধার করে দেশটির নৌবাহিনী। ওই সময় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল উদ্ধার হওয়া সবাই ‘বাংলাদেশি’ নাগরিক। গত শুক্রবার আন্দামান সাগর থেকে আরও ৭৩৪ অভিবাসন প্রত্যাশীদের উদ্ধার করা হয়। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি এদের অধিকাংশ ‘বাংলাদেশি’। তবে বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ দিয়ে জানিয়েছে, ৭৩৪ জনের মধ্যে দুই থেকে তিনশ রোহিঙ্গা রয়েছে। এছাড়া এর আগে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছিল, উদ্ধার হওয়া দুইশ জনের সবাই বাংলাদেশি নয়। এদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গাও রয়েছে। প্রসঙ্গত, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। তাদেরকে সীমান্ত পাড়ি দেয়া অবৈধ বাংলাদেশি মনে করে তারা।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন্না মাউং লুইন উদ্ধার হওয়া মোট ৯৪২ অভিবাসন প্রত্যাশীর মধ্যে বাংলাদেশিদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য নাইপিদুতে বুধবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। সুফিউর রহমান মিয়ানমারকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। অভিবাসন প্রত্যাশীদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া রোববার থেকে শুরু হবে।
তবে ওই ৯৪২জনের কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। তথ্যমন্ত্রী ইয়ি হতুত জানিয়েছেন, অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা সে দেশের কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করবে। তাই তাদে নির্দিষ্ট সংখ্যা এই মুহূর্তে তিনি নিশ্চিত বলতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘ আমরা যে তালিকা দিয়েছি, তা যাচাইয়ের পর তারা লোকদের ( যেসব বাংলাদেশিদের খুঁজে পাওয়া যাবে) ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।’ তবে কতজনকে সীমান্তের ওই পাড়ে নিয়ে যাওয়া হবে তা শুক্রবার নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ইরিওয়াদ্দা জানিয়েছে, শুক্রবার উদ্ধার হওয়া ৭৩৪জনকে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আরকান রাজ্যের তাউং পাইও লেত ওয়াল সাময়িক আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সেখানে পৌঁছেছেন। সেখানে তাদের পরিচয় যাচাইয়ের কাজ চলছে।