ফেনী প্রেস ক্লাবে বিবদমান দুটি পক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরে সোমবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলা ও সংঘর্ষে ক্লাবের একাংশের সভাপতি ও বাংলাভিশন প্রতিনিধি রফিকুল ইসলামসহ সাত সাংবাদিক আহতের ঘটনায় থানায় দু’পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন।
হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফেনীতে কর্মরত সাংবাদিকরা মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। ফের শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কায় প্রশাসন প্রেস ক্লাব বিকালে সিলগালা করে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে উভয়পক্ষ গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রেস ক্লাবে একই সময় পাল্টাপাল্টি সভা আহবান করে। সোমবার রাতে রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ ক্লাবে ব্যানার টাঙালে সময় টিভি প্রতিনিধি বখতেয়ার মুন্না ও বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধি জমির বেগ নেতৃত্বাধীন গ্রুপের লোকজন ছিঁড়ে ফেলে। রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি বাধা দিলে বখতেয়ার মুন্না বহিরাগত লোকজন নিয়ে তাকে অতর্কিত ছুরিকাঘাত করে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে একাত্তর টিভি প্রতিনিধি জহিরুল হক মিলু, সাপ্তাহিক নির্ভীক সম্পাদক জাফর সেলিম, দিনকাল প্রতিনিধি মফিজুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিক শাহআলম আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে বহিরাগতরা সরে পড়ে। এসময় সহকর্মীরা রফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থার অবনতি ঘটলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে দুপুরে ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সভায় প্রেস ক্লাবে হামলায় জড়িত সাংবাদিক মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে বহিস্কার ও তাদের গণমাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষনার দাবি জানান। সভায় নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের ওপর হামলাকারীদের আড়াল করতে পুলিশ তাদের পক্ষ থেকেও পাল্টা মামলা নিয়েছে।
এদিকে বিকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেলুল কাদের প্রেস ক্লাব সিলগালা করে দেন।
এ ঘটনায় ফেনী প্রেস ক্লাবের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ও দেশ টিভির ফেনী প্রতিনিধি শেখ ফরিদ উদ্দিন আক্তার বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। আসামিরা হলেন: সময় টিভি প্রতিনিধি বখতেয়ার ইসলাম মুন্না, মাছরাঙ্গা টিভির ফেনী প্রতিনিধি জমির উদ্দিন বেগ ও একুশে টিভির সাবেক ফেনী জেলা প্রতিনিধি এবং সাপ্তাহিক ফেনী টাইমস নির্বাহী সম্পাদক মোস্তফা কামাল বুলবুল। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক জমির বেগ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় আহত রফিকুল ইসলাম ছাড়াও, সমকাল প্রতিনিধি শাহজালাল রতন, দেশ টিভি প্রতিনিধি শেখ ফরিদ, ৭১ টিভি প্রতিনিধি জহিরুল হক মিলু, এশিয়ান টিভি প্রতিনিধি জাফর সেলিম, দিনকাল প্রতিনিধি মফিজুর রহমান ও সাপ্তাহিক গ্রামদেশের নির্বাহী সম্পাদক শাহ আলম নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ে করা হয়েছে।
ফেনী প্রেস ক্লাবের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জের ধরে রফিকুল ইসলাম ও শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার পাল্টা কমিটি গঠন করে ২৫ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ক্লাবে অবস্থান নেয়। পাল্টাপাল্টি অবস্থানের একপর্যায়ে ভোটগ্রহন স্থগিত ঘোষনা করা হয়। একইসাথে ক্লাবে সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। এ নিয়ে উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি বক্তৃতা, বিবৃতি ও থানায় অভিযোগ দায়ের করে। একপর্যায়ে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর মধ্যস্থতায় প্রায় দুই মাস পর ক্লাব খুলে দেয়া হয়।
 
								 
								 
															 
								
 
								



 
								 
								 
								



















 
															 
								