বাংলাদেশের মানুষের পরিচিত প্রবাদ—‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। কিন্তু সময় বদলেছে। মাছ এখন আর সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের খাবার নয়, বরং বিলাসী পণ্য হয়ে উঠছে। বিশেষ করে মধ্য ও নিম্নবিত্তের ভরসা ছিল ছোট মাছ, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস; সেগুলোও এখন সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোট মাছের দাম আকাশছোঁয়া। মলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০০-৬০০ টাকা, পুঁটি ৪০০-৫০০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, ট্যাংরা ৭৫০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০-১২০০ টাকা। এক সময় গরিব মানুষের ভরসা ছিল এই ছোট মাছ, আজ সেগুলো ধনীদের প্লেটে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সস্তা মাছের তালিকায় থাকা তেলাপিয়া ও পাঙ্গাসও আর সস্তা নেই। বর্তমানে তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৫০-২৮০ টাকা, পাঙ্গাস ২৩০-২৫০ টাকা। বিক্রেতাদের দাবি, মাছ চাষে ফিড, পরিবহন, বরফ ও জ্বালানির খরচ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
একজন গৃহিণী আক্ষেপ করে বলেন, “আগে প্রতিদিন মাছ কিনতাম, এখন মনে হয় বিলাসী কিছু কিনছি।” আরেক ক্রেতার ভাষায়, ছোট মাছ এখন শিশুদের জন্য মাঝে মাঝে অল্প করে কেনা হয়, নিয়মিত খাওয়ার মতো আর অবস্থা নেই।
অন্যদিকে বিক্রেতারা দায় চাপাচ্ছেন পরিবহন খরচ ও সরবরাহ সংকটে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির কারণেই মূলত দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৬%, এবং কৃষিভিত্তিক খাতে এর অবদান প্রায় ২৫%। এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। উৎপাদন বাড়লেও সেই সুফল ভোক্তার পাতে পৌঁছাচ্ছে না।
আর্থ নিউজ ২৪/ এম ওয়াই
























