সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামে নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ফ্লাইওভার। সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে নগরীর মুরাদপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা সিডিএ’কে ধার দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে বন্দরনগরীর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এ আকতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। সাড়ে পাঁচশ’ কোটি টাকা খরচ করে এ ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হওয়ার কথা ছিলো ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে এ ফ্লাইওভার এখন বিমানবন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে এর দৈর্ঘ্য যেমন ১৮ কিলোমিটার বাড়ছে, তেমনি খরচ বাড়বে তিন হাজার কোটি টাকা। আর এ টাকা বন্দরের নিজস্ব তহবিল থেকে সিডিএ’কে ধার হিসেবে দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘বন্দরের অর্থায়নে এটি শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এটি হলে বন্দরের গতি বৃদ্ধি পাবে।’ কিন্তু তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় সিডিএ’র চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে গেলে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হবে বন্দরকে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, ‘বলা হয়েছে বন্দরের আর্থিক সহায়তা নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু বন্দরের সে সক্ষমতা আছে কি না- সেটিও দেখার বিষয়। বন্দরের প্রতিবছর নিজস্ব কিছু ব্যয় আছে।’ এদিকে, বিজ্ঞানভিত্তিক ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা না গেলে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বিশাল এ প্রকল্প ভেস্তে যাবে বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান। তিনি বলেন, ‘ফ্লাইওভারের পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় বিদ্যমান ফ্লাইওভারগুলোর মতো এটিও বেশি কাজে দেবে না।’
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ ফ্লাইওভারে চলাচলের ক্ষেত্রে টোল আদায় করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আর সেখান থেকে পরিশোধ করা হবে বন্দরের ঋণের তিন হাজার কোটি টাকা। অবশ্য তার আগে বন্দর এবং সিডিএ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ৩০ মাসের এ প্রকল্পের ইতেমধ্যে ৬ মাস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ। লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পকল্প এ হিসেবের বাইরে। তারপরও সিডিএ কর্মকর্তারা আশা করছেন, সরকারের এ মেয়াদেই শেষ হবে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প।