‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম/বন্ধুর কাছে মনের খবর কেমনে পৌঁছাইতাম’। এখন খবর পৌঁছাতে টেলিফোন-টেলিগ্রাম নয়, ডিজিটাল দুনিয়ার অলিগলিতে ঘোরা ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রামই কান্ডারির ভূমিকা পালন করছে। তবে বিপিএলে সেঞ্চুরি করা উসমান খান সে ভূমিকার পরোয়া করেন না।
গতকাল সোমবার (৯ জানুযারি) মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে সেঞ্চুরি পেয়েছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার উসমান খান। এটিই তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। বিপিএলের ষষ্ঠ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে করা এই সেঞ্চুরির কারণে হয়েছেন প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ। তবে ম্যাচ জয়ের নায়ক উসমান খান অবাক করেছেন সবাইকে।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এসে উসমান বলেন, ‘আমার কোনো ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকউন্ট নেই। ফলে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে কে কী বলে, তা দেখি না। সেখানে কী হয় তাও আমি জানি না।’ উসমানের এমন কথা শুনে একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে যে কারও অবাক হওয়ারই কথা।
এর আগে প্রথম ম্যাচে হেরে চট্টগ্রাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিল, ‘আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।’ এরপরেই চট্টগ্রামকে নিয়ে ট্রল করা হয়। ধারণা করা হয়েছিল, সেই ট্রল দেখেই উসমান ভালো খেলার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তবে তার মুখের জবাবে সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
বিপিএলের ম্যাচটিতে ৫৮ বলে অপরাজিত ১০৩ রান করেন উসমান। এই রান করতে দশটি চার ও পাঁচটি ছক্কা হাকিয়েছেন তিনি। ব্যাটিং করেছেন ১৭৭.৫৮ স্ট্রাইক রেটে। আর এমন দুর্দান্ত ইনিংসের কল্যাণে চট্টগ্রাম পেয়েছে নয় উইকেটের জয়। খেলার এমন ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে হয়তো ভবিষ্যতে ভালো কিছু হতে পারে উসমানের জন্য।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উসমান খানের অভিষেক হয় ২০১৭ সালের কায়েদে আজম ট্রফিতে। তবে দীর্ঘ পাঁচ বছরে তেমন বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুই বছর আগে অভিষেক হলেও ম্যাচ খেলা হয়েছে সাতটি। তবে সুযোগের সন্ধানে থাকা উসমান কাজের কাজটি করলেন বিপিএলে। চট্টগ্রাম যে সুযোগ তাকে দিয়েছে সেটিকে কাজে লাগিয়ে আরেক পাকিস্তানি সেঞ্চুরিয়ান আজম খানের খুলনাকে হারিয়েছেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানি এই ক্রিকেটার না থাকলেও ভালো খেলার খবরটি এখন সেখানেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। হয়তো এরই সুবাদে জাতীয় দলের সুনজরেও আসতে পারেন তিনি। ২৭ বছর বয়সী ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের জন্ম হয়েছে করাচিতে। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৮ ম্যাচ খেলে করেছেন ২৫৫ রান।