চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন- সিইউজে’র সাবেক অর্থ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য আব্দুর রউফ পাটোয়ারী (৫৬) রাত সোয়া একটার দিকে চমেক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্তেকাল ( ইন্না …রাজিউন )। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাবেক অর্থ সম্পাদক আবদুর রউফ পাটোয়ারীর নামাজে জানাজা আজ রবিবার(৩এপ্রিল) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে সামনে অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযা শেষে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তাঁর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বিএফইউজের সহ সভাপতি শহীদ উল আলম, সাবেক সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সিনিয়র সহ সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি স. ম. ইব্রাহিম, সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, নির্বাহী সদস্য মহরম হোসাইনসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাদে যোহর দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করার কথা রয়েছে।
সাংবাদিক আবদুর রউফ পাটোয়ারীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। শোক বিবৃতিতে সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, তাঁর মৃত্যুতে সিইউজে একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মীকে হারিয়েছে। এ শূণ্যতা পূরণ হবার নয়। নেতৃবৃন্দ তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য আবদুর রউফ পাটোয়ারীর পৈত্রিক নিবাস ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার আমজাদ হাট ইউনিয়নের তারাকুচা গ্রামে। মৃত্যুকালে তিনি ছয় ভাই , ছয় বোন, অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
আব্দুর রউফ পাটোয়ারীর অকাল মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তিনি দীর্ঘ সময় সহ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন দৈনিক আজকের চট্টগ্রামে । সিইঊজে’র দৈনিক সাঙ্গু- প্রিয় চট্টগ্রাম ইউনিটের প্রধান ছিলেন।
আব্দুর রউফ পাটোয়ারী’র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সাংবাদিক নেতা ও বিভিন্ন পর্যয়ের সাংবাদিকরা।
আব্দুর রউফ পাটোয়ারী’র মৃত্যুতে সাংবাদিক নেতা রিয়াজ হায়দার চৌধুরী গভীর শোক জানিয়ে, সামাজিক মাধ্যমে লিখেন “গভীর শোক
কেবলই অন্তর্জালা
রাত সোয়া দুইটায় চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়েও বিশ্বাস হচ্ছিল না আব্দুর রউফ পাটোয়ারী ভাই আর নেই ! অবিশ্বাস্য।
সদা হাস্যোজ্জ্বল মানুষটি এভাবেই চলে গেলেন। অনেক স্মৃতি আমাদের।
তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন- সিইউজে’র সাবেক অর্থ সম্পাদক । ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবেরও এক সময়কার সদস্য । দীর্ঘ দিন কাজ করেন আজকের চট্টগ্রামে । সিইঊজে’র দৈনিক সাঙ্গু- প্রিয় চট্টগ্রাম ইউনিটের প্রধান ছিলেন। তাঁর সেই সময়কালে সিইউজে সভাপতি হিসেবে আমাকে সহকর্মীদের ন্যায্য হিস্যা, চাকুরির নিশ্চয়তা নিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে কঠিন সময়। সবার যোগে একটি আন্দোলনে সফলও হয়েছিলাম আমরা।
অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য অটল ভুমিকা রাখা আব্দূর রউফ পাটোয়ারী ভাই এভাবে অকস্মাৎ চলে গেলেন ! পারলেন যেতে !?
বেদনা জাগানিয়া গভীর রাত হতে সুবেহ সাদিকে হাসপাতালের বারান্দায়-পরিপাশে কেবলই শোক ! মুখ ও মুখোশের ফাঁরাকে দেখে যাওয়া ইহলোকে অনিস্পন্ন জীবনের কেবলই অন্তর্জালা ।
মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র রমজানের এই প্রথম রজনীতে এমন মৃত্যকে কবুল করে নিন। রুহের শান্তি দান করুন। আমিন।”
আরেক সাংবাদিক নেতা হাসান ফেরদৌস সামাজিক মাধ্যমে লিখেন,“ বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিইউজে থেকে তিনিসহ কয়েকজন কে বাদ দিতে হবে! সর্বশেষ ২০২০ ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে নানা ভাবে চেষ্টা করা হয়। কারণ এই পাটোয়ারী তথাকথিত নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে অধিকার আদায়ে দাবিতে নিজেরাই আন্দোলন করছেন দৈনিক সাঙ্গু এবং প্রিয় চট্টগ্রামে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের সেই স্বপ্ন আমি বাস্তবায়িত হতে দেইনি। সদস্যপদ বাতিল হয়নি, বরং ২০২০ সালে সিইউজের সর্বশেষ নির্বাচনে নির্বাচনও করেছন তিনি। মানুষটি নানা অর্থে কষ্টে ছিল, কিন্তু মাথা নিচু করেননি, আপোষ করেননি। অনেকটা নিরীহ প্রকৃতির হলে আর্দশকে বিক্রি করেননি হাল জামানার কথিত নেতাদের মতো। গত কয়েকদিন আগেও কথা হচ্ছিল নানা বিষয় নিয়ে। তার অভিমানী চলে যাওয়া কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না, তাপরও মেনে নিতে হয়! ওপারে ভালো থাকবেন পাটোয়ারী ভাই। বিনম্র শ্রদ্ধা। ”