ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ও পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসএম জসিম উদ্দীন নামে এক ব্যবসায়ী বুধবার ২৬ আগস্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদীর আইনজীবী জুয়েল দাশ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এসএম জসিম উদ্দীনকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় এবং পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে লিয়াকত আলীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত লিয়াকতসহ সাত জনের বিষয়ে তদন্ত করতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
লিয়াকত ছাড়া অপর অভিযুক্তরা হলেন- কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার তৎকালীন এসআই নজরুল ও এসআই হান্নান, এস এম সাহাবুদ্দিন, বিষ্ণুপদ পালিত, কাজল কান্তি বৈদ্য ও জিয়াউর রহমান।
বাদী জসিম উদ্দীন পতেঙ্গা থানার নাছির নগর এলাকার বাসিন্দা। তার সাগরিকা এলাকার একটি কারখানা আছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৩ সালে নিজ কারখানায় চুরির ঘটনায় জসিম উদ্দিন আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ডিবির তৎকালীন এসআই লিয়াকত আলী। ২০১৪ সালের ১৪ জুন তদন্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জসিম উদ্দীনকে তার অফিসে ডেকে নেন। এর আগেই মামলা সঠিকভাবে তদন্তের জন্য তার কাছ থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে আবার জসিম উদ্দীনকে অফিসে ডেকে নিয়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করার চাপ দেন। জসিম উদ্দীন রাজি না হয়ে অফিস থেকে বের হয়ে আসার সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে তাকে আটক করে চোখ বেঁধে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। চোখ খোলার পর দেখেন তিনি পতেঙ্গা থানায় আছেন। সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে তাকে মারধর করেন। পরে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। আড়াই লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাদের হাতে দেন জসিম উদ্দীন। টাকা দেওয়ার পর তাকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার একটি ভুয়া পরোয়ানার মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় ছয় মাস জেল খেটে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। এ ঘটনায় তিনি ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ দেন।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে লিয়াকতসহ সাত জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। বাকি ছয় জনকে অভিযোগ থেকে বাদ দেন। অভিযোগ থেকে বাদ পড়া ছয় জন হলেন সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন এসআই সন্তোষ কুমার, পতেঙ্গা থানার তৎকালীন এসআই কামরুল, সদরঘাট থানার তৎকালীন এসআই তালাত মাহমুদ, পতেঙ্গা থানার তৎকালীন ওসি প্রণব চৌধুরী, সদরঘাট থানার তৎকালীন ওসি মর্জিনা বেগম এবং গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বাবুল আক্তার।