গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার কিট উদ্ভাবনকারী দলের প্রধান অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছাতে পারে।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকেই বাংলাদেশে ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা।সোমবার বাংলাদেশে রেকর্ড ১৬০২ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া নতুন করে মারা করোনায় মারা গেছেন ২১ জন।
গত ১ মে বাংলাদেশের করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৬ হাজার। আর এখন বাংলাদেশের করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৮৭০ জনে। আর মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের। অর্থাৎ গত ১৮ দিনে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার করোনা রোগী বৃদ্ধি পেয়ছে।
করোনা ভাইরাসের কার্যকরি কোন ওষুধ এখনো বিশ্বে আবিষ্কৃত হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে হার্ড ইমিউনিটির অর্জনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষক ড. বিজন কুমার শীল জানায়, সরকার করোনা পরীক্ষার জন্য গণস্বাস্থ্যের কিটের চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে তারা আরো বেশি পরীক্ষা করতে পারবেন । আর শনাক্ত বেশি হলে ধীরে ধীরে রোগীর সংখ্যা কমতে পারে।
সার্স ভাইরাসের কুইক টেস্ট পদ্ধতিও আবিষ্কার করেছিলেন ড. বিজন কুমার শীল। সার্স ভাইরাস প্রতিরোধে সিঙ্গাপুর সরকারের একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
ড. বিজন কুমার শীল জানায়, দুই ভাবে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। যারা আক্রান্ত হয়েছেন ও আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের দ্রুত সম্ভব আইসোলেশনে পাঠাতে হবে এবং তাদের আশপাশের মানুষদের লকডাউনের থাকতে হবে। আরেকটি হলো হার্ড ইমিউনিটির মাধ্যমে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা। বাংলাদেশে লকডাউন করে করোনা নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি ফলপ্রসূ হয়নি দাবি করে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী পুরো দেশে ছড়িয়ে গেছে এবং বাতাসেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা চাইলেও মানুষকে দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকে রাখতে পারবো না। এমন পরিস্থিতিতে আর বাংলাদেশের জন্য এখন একমাত্র উপায় হচ্ছে হার্ড ইমিউনিটির মাধ্যমে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
আরো পড়ুন :করোনা ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে- কারল সিকোরা
বাংলাদেশে কিছু মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের এন্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে জানিয়ে ড. বিজন কুমার শীল আরো বলেন, এখন আমাদের মানুষের শরীরের রক্ত পরীক্ষা করে জানতে হবে যে কত মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। যদি ৫০ শতাংশ মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয় তাহলে বলা যায় যে এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, প্রতিদিন ১৫ হাজার টেস্ট করানোর জন্য সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।