বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ৩০ দিনের মধ্যে বড় পরিবর্তন দেখতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যথায় সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ীভাবে অর্থায়ন বন্ধ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক টেড্রোস আধানম ঘ্যাব্রিয়াসুসকে উদ্দেশ্য করে লেখে একটি টুইট বার্তায় ট্রাম্প এমনটি জানান। টুইটে ট্রাম্প লেখেন, উহান থেকে গত বছর ভাইরাস যে ভাইরাস ছড়িয়েছে সেটি নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন ধারাবাহিকভাবে উপেক্ষা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই টুইট বার্তায় ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চীনের হাতের পুতুল বলেও আখ্যায়িত করেন।
শুরু থেকেই করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য একে অপরকে দুষছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। করোনা মহামারি মোকাবিলায় হিমশিম খেলেও দোষারোপ থেমে নেই যুক্তরাষ্ট্রের।
গত ১৪ এপ্রিল চীনের প্রতি পক্ষপাতিত্বের কারণ দেখিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) অনুদান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মূহূর্তে, মহামারি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব ও সমন্বয় প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সরিয়ে দিলে কোনো বৈশ্বিক সমন্বয় ও নেতৃত্ব ছাড়া এই মহামারি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ডব্লিউএইচওর বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনা ও লুকোচুরির অভিযোগ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জাতিসংঘের এই সংস্থাকে ‘চীনকেন্দ্রিক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চীনের প্রতি পক্ষপাতি হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আদহানম। ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। করোনা নিয়ে রাজনীতি না করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে একসঙ্গে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আহ্বান জানান মহাপরিচালক আদহানম।
এদিকে, ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র মহামারি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাও লিজিয়ান বলেন, ‘চীনের উহান শহরে নয়, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে হয়ে থাকতে পারে।’
ট্রাম্পের এযাবত যত অভিযোগ করেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেইজিংয়ের সুবিধা অনুযায়ী করোনা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্প। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ হচ্ছে না এমন ঘোষণার কারণে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে যাওয়া ছিল ডব্লিউএইচওর সবচেয়ে বড় ভুল। সেটি বিপজ্জনক একটি সিদ্ধান্ত ছিল। ভাগ্যক্রমে, আমি এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারছিলাম না। আর সেজন্যই আমি চীনে ভ্রমণ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেই। অগণিত মানুষ এর ফলে করোনা থেকে রক্ষা পায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডব্লিউএইচও যদি শুরুতেই বিশেষজ্ঞদের দিয়ে চীনের পরিস্থিতি যাচাই করতো এবং চীনের অস্বচ্ছতা প্রকাশ করে দিতো, তাহলে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যেত, মৃত্যুও অনেক কম হত।’