শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চিন্তা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত তথাকথিত শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস মহামারিকে পরাজিত করার ক্রমবর্ধমান আলোচিত ভাবনাকে হিসাব-নিকাশের ভুল এবং এই চিন্তা-ভাবনা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
সোমবার (১১ মে) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমারজেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইকেল রায়ান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, এটা সত্যিই বিপজ্জনক, বিপজ্জনক হিসাব-নিকাশ। শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ কর্মকর্তা বলেন, যেসব দেশ করোনা মোকাবেলায় কোনো ব্যবস্থা নেই সেই সব দেশের ধারণা শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাদের ধারণা হঠাৎ করেই তারা ম্যাজিক্যালি শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতে পৌঁছাবে। কিন্তু এই পথে যদি আমরা কিছু বয়স্ক মানুষকে হারিয়ে ফেলি, তখন কি হবে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই কর্মকর্তা বলেন, মানুষের মাঝে শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখনই প্রযোজ্য যখন বিজ্ঞানীদের হিসাব-নিকাশ করা দরকার যে, একটি সমাজে কত সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া গেলে যথাযথ শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতে পৌঁছানো যাবে।
শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার চিন্তা-ভাবনাকারী নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম উল্লেখ করেননি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা। তবে ইউরোপের দেশ সুইডেনসহ বিশ্বের আরও কিছু দেশ করোনা মোকাবেলায় কঠোর লকডাউন আরোপ না করায় সেসব দেশের দিকে ইঙ্গিত করে এসব কথা বলেছেন মাইকেল রায়ান। কারণ ওই সব দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা লকডাউন না থাকলে শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে পারে বলে যুক্তি দেখিয়েছেন।
ভেটেরিনারি মেডিসিন শাস্ত্র থেকে হার্ড ইমিউনিটির ধারণাটির উদ্ভব হয়েছে। যা প্রাথমিকভাবে জনস্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে। প্রাকৃতিক ভাবে একটি জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশের শরীরে কোনও সংক্রামক রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে এমন ধারণা থেকে শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উৎপত্তি। তখন ওই জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা সংক্রমিত হননি; তাদের মধ্যে রোগটির কম বিস্তার ঘটবে।
প্রাথমিকভাবে নভেল করোনা ভাইরাসকে যেভাবে ভাবা হয়েছিল বর্তমানে এটি তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।