করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত, সারাদেশে ছুটি বা অঘোষিত লগডাউন এখন তেমন কার্যকরী নেই! সারাদেশে বেশীরভাগ অফিস, ব্যাংক, কল-কারখানা, মুদি-মাছ-মাংস-সবজির বাজার এবং বাস ছাড়া অন্যান্য গাড়ী অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মেই বাধাহীনভাবে চলতেছে।
শুধুমাত্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য নির্ধারিত বানিজ্যিক কেন্দ্র ও গ্রামান্ঞ্চলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করতে পারেনি। শুধু তাদের জন্যই যত বাধা-নিষেধ কার্যকর। এই সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা না পারছে কারো কাছে হাত পাততে, না পারছে ত্রানের লাইনে দাড়াতে এবং পারছে না তাদের মজুদ মাল বিক্রি করে সংসারের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করতে! ফলশ্রুতিতে তাদের মজুদকৃত পন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং গুনাগুন-মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং এই সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নগদ টাকার সংকটে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে, সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে স্ব্যাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত কিছু শর্তারোপ করে, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। শর্ত গুলো মেনে দোকান খুলতে হবে, না হলে নানাবিধ শাস্তি বা জরিমানার বিধান থাকতে পারে।
কি কি শর্ত দেওয়া যেতে পারে—
(১) পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতঃ মালিক, বিক্রয়কর্মী ও ক্রেতাদের মধ্যে বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
(২) কোন ধরনের জমায়েত ও ভীড় করে পন্য ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।
(৩) সকল পন্য ন্যায্যমূল্যে এবং এক দামে ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে।
(৪) সকল ওয়েটিং রুম বন্ধ করে দিতে হবে এবং কাস্টমার বসার জন্য দেওয়া আসনগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।
(৫) বিক্রিত পন্য ফেরত বা পরিবর্তন নিরুৎসাহিত করতে হবে।
(৬) মাস্ক ও গ্লাভস সকলের জন্য বাধ্যতামুলক করা এবং ক্ষেত্র বিশেষে জীবানুনাশক দিয়ে হাত-পা ধুয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
(৭) সম্ভব হলে ব্যানিজিক কেন্দ্র গুলোতে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্র ব্যবহার করে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করতে হবে।
(৮) অসুস্থ লোক, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া যাবে না এবং বিক্রয় কেন্দ্রে প্রবেশাধিকার থাকবে না। এই ধরনের কিছু শর্তারোপ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের ব্যানিজ্যিক কেন্দ্র চালু করে দেওয়া যেতে পারে। কোন ধরনের শর্ত ভংগ করলে এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়াসহ, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যবসায়ী সমিতি, জন-প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য ও স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কতৃক এতদবিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
লেখকঃ মতিউর রহমান ফরহাদী
ব্রান্ঞ্চ ইনচার্জ মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড
সীতাকুণ্ড শাখা, চট্টগ্রাম।
আরো পড়ুন : করোনা ঝুঁকি বনাম বাংলাদেশের অর্থনীতি