প্রতি বছর দেশে মহাসমারোহে পরিবেশ দিবস পালিত হলেও সচেতনতার অভাবে ভয়াবহ দূষণে মরতে বসেছে রাজধানীর আশপাশের নদীগুলো। শতশত শিল্প-কারখানার তরল বিষাক্ত বর্জ্যে নদীগুলো পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাগাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পরিবেশ দিবসেই নয়, সারা বছরই সরকারি তদারকি জোরদার রাখতে হবে। তবে, দূষণ রোধে সরকার সজাগ বলে দাবি পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের।
এটি কোনো ফোয়ারার দৃশ্য নয়। নিয়ম অমান্য করে বড় কলকারখানা ও ট্যানারি শিল্প থেকে বেরিয়ে আসছে কেমিক্যালযুক্ত বিষাক্ত পানি। মিশছে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত নদীর পানির সাথে। মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, তুরাগকে ২৯টি, শীতলক্ষ্যাকে ৪২টি ও বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণে মূলত ভূমিকা রাখছে ট্যানারিসহ পাঁচ শতাধিক শিল্প কল-কারখানার বর্জ্য।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, শুধুমাত্র হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের মাধ্যমেই দৈনিক ৭৭ লাখ লিটার তরল বর্জ্য ও ৮৮ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য উৎপাদন হয়ে মিশে যাচ্ছে নদীর পানি বা বাতাসের সাথে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব শিল্প-কারখানার বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করা একান্ত জরুরি।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘১৯৯৫ সালের আইনে বলা আছে, কেউ বর্জ্যকে দূষিত অবস্থায় ফেলতে পারবে না। তাকে পানি শোধন করে তার কারখানায় চক্রাকারে ব্যবহার করতে হবে।’
বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যে উন্নয়ন পরিবেশকে ধ্বংস করে। সেই উন্নয়নকে কখনোই আমরা টেকসই উন্নয়ন বলবো না। পরিবেশ রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকার যতটা না কাগজে যতটা না মুখে ততটা কিন্তু বাস্তবে না।’
তবে পরিবেশ ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে রক্ষায় সবার আগে জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘এরপর সরকারের হাতে একটাই বিকল্প থাকবে কারখানা বন্ধ করে দেয়া। কিন্তু সেটা তো কোনো সমস্যার সমাধান না। এসব সমস্যা তো মানুষ সৃষ্টি করছে। এই মানুষগুলোকে সচেতন করতে হবে।’