[english_date]

২০১৭ সাল নাগাদ অভিবাসী সংখ্যা ৩০ লাখ ছড়াবে ইউ ইউ ভুক্ত দেশগুলোতে

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ২০১৭ সাল নাগাদ অভিবাসী সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে ইউরোপীয় কমিশন। তবে জোট কমিশন এ বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে বোঝা হিসেবে নয় বরং জনশক্তি হিসেবে দেখছে। যা জোটের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। চলতি বছর এই সংখ্যা ১০ লাখে ঠেকবে উল্লেখ করে জাতিসংঘের অভিবাসী বিষয়ক সংস্থা সাড়ে ৯ কোটি ডলার অর্থ সহায়তার প্রয়োজন বলে জানায়। এ অবস্থায় জার্মানিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার প্রক্রিয়ায় জোর দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল।

অস্ট্রিয়ার সীমান্ত ঘেঁষা স্লোভেনিয়ার সেনতিলজ শহরে হাজার হাজার মানুষের অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না। সীমান্তে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্ট্রিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা কিছুক্ষণ পর পর নির্দিষ্ট সংখ্যক অভিবাসীদের সীমান্ত অতিক্রমের অনুমোদন দেয়ায় ভিড় বাড়ছেই।

এক অভিবাসন প্রত্যাশী বলেন, ‘আমার দেশ যুদ্ধের আগুনে জ্বলছে। সেখানে কোন ভবিষ্যৎ তো দূরে থাক, জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই। পরিবারের কথা ভেবে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।’

যুদ্ধ, অস্থিতিশীল রাজনীতি ও দারিদ্রের কবলে পড়ে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের অভিবাসী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। ইউরোপে ইতোমধ্যে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি অভিবাসী আশ্রয় নিয়েছে উল্লেখ করে তাদের সাহায্যে সাড়ে ৯ কোটি ডলার অর্থ সাহায্যের প্রয়োজন বলে জানায় সংস্থাটি। এ জনস্রোত অব্যাহত থাকলে বছর শেষে তা ১০ লাখে ঠেকবে বলেও জানায় তারা।

জাতিসংঘের অভিবাসী বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র উইলিয়াম স্পিন্ডলার বলেন, ‘চলতি বছরের নভেম্বর থেকে সামনের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ৬ লাখ অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করতে পারে। ২০১৬ সাল নাগাদ মোট সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়াতে পারে। ২০১৭ সালে যুক্ত হবে অন্তত ৫ লাখ অভিবাসী।’

অভিবাসীর এ স্রোতকে বোঝা হিসেবে না দেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে ইইউ। ইউরোপে আগত অভিবাসীদের তিন-চতুর্থাংশ কাজ করার মতো বয়সের হলে সামনের বছরগুলোতে ইইউ এর শ্রমশক্তি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। যা মোট দেশজ উৎপাদনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। অভিবাসীদের বেশির ভাগ জার্মানিমুখী হওয়ায় দেশটি সাময়িক আর্থিক সংকটের মুখে পড়লেও অদূর ভবিষ্যতে তাদেরও লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এদিকে অভিবাসীদের চাপ সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ দেশের দায়সারা আচরণের তীব্র নিন্দা জানান ইউরোপীয় কমিশন। এক্ষেত্রে জার্মানি যে ভূমিকা রাখছে তা প্রশংসনীয় উল্লেখ করে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলকে সব ধরণের সহায়তা দেয়ার কথা জানান ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, ‘অভিবাসী ইস্যুতে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি সদস্য দেশ যে দায়সারা আচরণ করছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জোটের সব দায় শুধু জার্মানি, সুইডেন, অস্ট্রিয়া আর হল্যান্ডের নয়। আমরা আজ যদি অভিবাসী সংকট সমাধান করতে না পারি তবে এই জোট ব্যর্থ প্রমাণিত হবে।’

তবে সংকট সামাল দিতে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ৫টি বিশেষ সাহায্য কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়ার প্রক্রিয়ায় গতি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে সব অভিবাসীদের আশ্রয় লাভের সুযোগ ক্ষীণ তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই এ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি। অন্যদিকে ইউরোপে প্রবেশের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথ পরিহারে উৎসাহিত করতে অভিবাসীদের বৈধ উপায়ে ইউরোপে আশ্রয় দেয়ার আশ্বাস দেন গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ