প্রতিদিনের মতো এদিনও সমুদ্র সৈকতে পোষ্য কুকুরটিকে নিয়ে দৌড়তে বেড়িয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু এদিনের তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল বিশেষ কিছু৷
দৌড়তে দৌড়তে হঠাৎই সুগন্ধ ভেসে আসে ব্রিটেনের ওয়েলস এলাকার ওই বাসিন্দারা নাকে৷যত সামনের দিকে এগতে থাকেন, ততই যেন সুগন্ধে ভরে উঠছিল চারপাশ৷খানিকটা দূরে সমুদ্র তটে রাগবি বলের মতো কিছু পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তাঁর পোষ্যটি অবশ্য ততক্ষণে মহা উৎসাহে ওই আশ্চর্য বস্তুটি শুঁকতে শুরু করে দিয়েছে৷ কালো-হলদে ছোপ ছোপ বলটিকে চিনতে দেরি করেননি ওই ব্যক্তিও৷ এক কিলোগ্রামেরও বেশি ওজনের ওই বলটি যে রাগবি বল নয় তা বুঝতে ভুল করেননি ওই সৌভাগ্যবান৷ সঙ্গে সঙ্গে বলটি কুড়িয়ে নিয়েই হাজির হন এক নিলামের আখড়ায়। নিলামদার পরীক্ষা করে জানান, বস্তুটি খাঁটি অ্যাম্বারগ্রিজ। মানে তিমি মাছের বমি। সমুদ্র সৈকতে তিমির বমি সচরাচর এভাবে খুঁজে পাওয়া যায় না৷ তিমি মাছের অন্ত্রে অ্যাম্বারগ্রিজ তৈরি হয়। জীববিজ্ঞানীরা মনে করেন, তিমির অন্ত্রের ভেতরে জ্বলন কমানোর জন্য এক ধরনের ক্ষরণ হয়। সেই ক্ষরণ থেকেই অ্যাম্বারগ্রিজের উৎপত্তি। কিছুদিন পর পর বমি বা মলের সঙ্গে তা তিমির শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। অ্যাম্বারগ্রিজ হল পারফিউম তৈরির অপরিহার্য উপকরণ। পারফিউমে সুগন্ধের মাত্রা বাড়াতে এবং তাকে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী করতে অ্যাম্বারগ্রিজ ব্যবহার করা হয়। তাই বস্তুটির মূল্যও আকাশছোঁয়া। ওয়েলসের সৈকতে খুঁজে পাওয়া ওই বমিটি কমপক্ষে ৫০ বছর সমুদ্রের নীচে ছিল বলে পরীক্ষায় জানা গিয়েছে৷
তিমির এই মূল্যবান বমির ন্যূনতম দরটা চড়া রেখেই শুরু হয় নিলাম৷নিলামে অংশ নিয়েছিলেন ৫০ জন৷শেষ পর্যন্ত দু’জনের মধ্যে চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই৷ফোনে দর হাঁকতে থাকা এক ব্যক্তি অবশেষে ১৬ হাজার ৭০০ ডলার দিয়ে তিমির বমিটি কিনে নেন৷ ওই ক্রেতার নাম অবশ্য জানা যায়নি৷তবে ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্যই তিনি ওই অ্যাম্বারগ্রিজ কিনেছেন বলে নিলাম সংস্থা সূত্রেক খবর৷