[english_date]

১৪-তেই ঘড়ি বানিয়ে গ্রেফতার

১৪ বছরের আহমেদ মহম্মদ বাড়িতেই বানিয়েছিল অ্যালার্ম ক্লক। গত সোমবার বন্ধুদের দেখাতে সেই ঘড়ি নিয়ে গিয়েছিল স্কুলে। কিন্তু টেক্সাসের ম্যাকআর্থার হাই স্কুল তার এই কৃতিত্বে খুশি হওয়ার পরিবর্তে ঘড়িটি দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ মনে করে, বুঝি নকল বোমা বানিয়েছে আহমেদ। সঙ্গে সঙ্গে ডাকা হয় পুলিশ। ক্লাসভর্তি সহপাঠীদের সামনেই হাতে হাতকড়া পড়িয়ে আহমেদকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

এরপরের ঘটনা কোনও হলিউডি সিনেমার চিত্রনাট্যের থেকেও আকর্ষণীয়। সোমবার যে ছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল, বুধবার সেই ছেলের নামেই হোয়াইট হাউস থেকে এল নিমন্ত্রণপত্র। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। ইতিমধ্যে অবশ্য একটি ট্যুইটও করে ফেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘পোটাস’ প্রোফাইলের ট্যুইট- “কুল ক্লক আহমেদ। হোয়াইট হাউসে এনে আমাকে দেখাবে? বিজ্ঞানের জগতে তোমার মত কিশোররাই তো আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। তোমরাই আমেরিকাকে এত সুন্দর করেছো।”

একা ‘পোটাস’ নন, আহেমদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফেসবুক কর্তা মার্ক জুকারবার্গ ও হিলারি ক্লিন্টনও। জুকারবার্গ তো ফেসবুকে লিখেই ফেললেন- তোমাকে স্কুলে গ্রেফতার করেছে? তুমি এক কাজ করো, আমাদের দফতরে চলে এসো। এখানে তোমার মত লোকেদের জন্য সবসময় দরজা খোলা।”

 ফলস্বরূপ, টেক্সাসের ম্যাকআর্থার হাই স্কুলের ১৪ বছরের পড়ুয়া এখন বিশ্বজুড়ে সেলেব্রিটির তকমা পাচ্ছে। আহমেদ নিজে এম আই টি-তে যোগ দিতে চায় বড় হয়ে। তার স্বপ্ন বিজ্ঞানকে সাধারণের ভালোর জন্য ব্যবহার করা। আগামী ১৯ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে গিয়ে সে কথাই ওবামাকে বলতে চায় আহমেদ।

সব দেখেশুনে আহমেদের বাবা, মহম্মদ আল হাসান(৫৪) আপ্লুত হয়ে পড়েছেন। মিডিয়ার সামনে ‘বাইট’ দেবেন কি, তিনি তো কেঁদেই ফেলছেন বারবার। তাঁর ছেলেকে এত লোক রাতারাতি চিনল কী করে, ভেবেই কূল পাচ্ছেন না। হ্যাঁ এ কথা ঠিক, গত ১০ বছর ধরে তাঁর বাড়ির টেলফোন, গাড়ি, ইলেক্ট্রিকের লাইন এমনকী কম্পিউটারও একা হাতে ছেলেই সারিয়ে দিত। কিন্তু যে দেশে থাকেন, সেই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের দফতরে থেকে ছেলের নামে আমন্ত্রণপত্র দেখে আবেদমথিত হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে, যে পুলিশ আহমেদকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল, তারাও এখন ক্ষমাপ্রার্থী। তাদের সাফাই, আমাদের কাছে তখন যে তথ্য ছিল তার নিরিখেই আমরা আহমেদকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হই।

একটি ধাতব স্যুটকেসের মধ্যেই অ্যালার্ম ঘড়িটি বানিয়েছিল আহমেদ। সুতরাং তা দেখতে সাধারণ ঘড়ির থেকে অনেকটাই বড় মনে হচ্ছিল। “তাই দেখে আমার ক্লাসটিচার ভুল বোঝে”, বুধবার সাংবাদিকদের জানান আহমেদ। টেক্সাসের মেয়র আহমেদের প্রশংসা করেছে। সব দেখেশুনে আহমেদকে প্রশ্ন করা হয়- তোমার বন্ধুদের কী বলবে? উত্তরে আহমেদ জানায়, “সবাইকেই বলব, পালটে যেও না। তুমি যা তুমি তাই থাকো। লোকের কথায় পালটে যেও না।”

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ