[english_date]

হারিয়ে যাচ্ছে অ্যান্টিলোপ

রহস্যজনক প্রাকৃতিক দুর্ঘটনায় মারা গেছে কাজাখস্তানের লক্ষাধিক সাইগা প্রজাতির অ্যান্টিলোপ হরিণ। বিশ্বের বিরলতম প্রাণিগুলোর অন্যতম এ বিশেষ হরিণের মৃত্যুর পেছনে ব্যাকটেরিয়াজনিত কোনো কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাজাখস্তানের বৃহৎ ছয়টি চারণভূমির চারটিতে  হরিণগুলোর গণমৃত্যুর এ রহস্যময় ঘটনা ঘটে। সাবেক প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেশটিতে সাইগা অ্যান্টিলোপ সংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই লাখ। মাত্র এক মাসের গণমৃত্যুর ঘটনায় মারা গেছে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার হরিণ। যা অ্যান্টিলোপের মোট সংখ্যাকে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।

মাত্র এক মাসে অ্যান্টিলোপ-মৃত্যুর এ বিশাল যজ্ঞের পেছনে কারণ খুঁজে বের করতে কাজাখ সরকার অনুরোধ জানিয়েছিল, দেশটির পশু সংরক্ষণ ও পরিযায়ী প্রাণি গবেষণাকেন্দ্র সিএমএসকে। এছাড়া সংস্থাটিকে সহায়তা করেছে, যুক্তরাজ্যের রয়াল ভেটেরিনারি কলেজের গবেষকরা। এছাড়া আহ্বায়ক দেশটির খাদ্য ও কৃষি ব্যসস্থাপনা সংস্থা বিদেশি সংস্থাটিকে সবরকম সহায়তা প্রদান করে যাবে। সিএমএস-এর গবেষকদের আপাতপ্রাপ্ত তথ্যমতে, আক্রান্তদের দেহে পেস্টুয়েরেলা এবং ক্লসট্রিডিয়া গণের ব্যকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে। পশুর দেহে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে এলে এ ব্যকটেরিয়াদ্বয় মারণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অ্যান্টিলোপগুলো আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুমুখে পড়েছে বলে জানা যায়। এ ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে প্রাণিদেহের যে সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলো হলো; ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া এবং মুখ দিয়ে ফেনা গড়ানো; এ সমস্ত লক্ষণ হরিণগুলোর মধ্যে সুস্পষ্ট দৃশ্যমান। এছাড়া আক্রান্ত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শ্বাসনালী নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়তে থাকে। এ অবস্থায় দুর্বল শরীরের প্রাণিটি দ্রুততম সময়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। গবেষাণালব্ধ এ তথ্যসমূহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের রয়াল ভেটেরিনারি কলেজের চিকিৎসকেরা। গবেষণায় যুক্ত আছেন কাজাখস্তানের প্রাণিবৈচিত্র্য সংরক্ষক সংস্থার প্রধান স্টিফেন জুথার জানান, তিনি যে পরিপালণে কেন্ত্রে গবেষণা করছেন, সেখানে মাত্র দুই দিনেই মারা গেছে আশি শতাংশ অ্যান্টিলোপ।

কাজাখস্তানে প্রায় ছয়টি সাইগা প্রজাতির অ্যান্টিলোপ পরিপালন কেন্দ্রের প্রায় চারটিই পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে, এ ‘ব্যাকটেরিয়ার’ সংক্রমণে। পরিপালন কেন্দ্রগুলো গড়ে তোলা হয়েছিল  মূলত প্রাণিহত্যাকারী পোচারদের আক্রমণ থেকে এ প্রজাতিরর হরিণকে রক্ষা করার স্বার্থে। অ্যান্টিলোপের শিং পোচারদের অন্যতম আকর্ষণ। অর্ধেকেরও বেশি অ্যান্টিলোপের মৃত্যু তাই কাজাখস্তানের জন্যে একটি দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। পরিপালনকেন্দ্রের বিস্তীর্ণ মাঠে অ্যান্টিলোপগুলোকে একীভূত করে গণহারে কবরস্থ করা হচ্ছে। প্রাণিদেহে আক্রমণকারী এ ব্যাকটেরিয়া মানুষের দেহেও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ