[english_date]

হারিয়ে যাওয়া সভ্যতা ইন্ডাস ভ্যালি

হারিয়ে যাওয়া যতগুলো সভ্যতা আমাদের আজও বিস্মিত করে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ইন্ডাস ভ্যালি। এ সভ্যতার যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে তা দেখলেই আমাদের মধ্যে বিস্ময়ের ঘোর লেগে যায়। অপূর্ব সব স্থাপত্যকর্মের জন্য প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম মানব নির্মিত বিস্ময় হিসেবে বিবেচিত ইন্ডাস ভ্যালি সভ্যতা। বর্তমান আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত এ সভ্যতা খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ অব্দের দিকে এ এলাকার অন্ততঃ সাড়ে বার লাখ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ছিল।

উন্নত বিকাশমান শিল্প ও অলঙ্কার ব্যবসার পাশাপাশি ইন্ডাস ভ্যালির লোকেরা পরিকল্পিত পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থাও চালু করে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবর্তক ইন্ডাস ভ্যালি সভ্যতার লোকেরা বৃহৎ পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্যের উপযোগী ওজন পরিমাপ পদ্ধতি চালু করে করে।

ইন্ডাস ভ্যালি সভ্যতার কেন্দ্রে ইতিহাস বিখ্যাত মহেঞ্জোদারো সভ্যাতা অবস্থিত। ঐতিহাসিকদের নিকট এটি পৃথিবীর প্রথমদিককার অন্যতম শহুরে সভ্যতা হিসেবে বিবেচিত।যোগাযোগের জন্য নিজস্ব লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবন করে ইন্ডাস ভ্যালি সভ্যতার লোকেরা নিজেদের বিস্তৃত ইতিহাস লিখে যায়। এখনো এসব ইতিহাসের অনেকগুলোর পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।এছাড়া ইন্ডাস ভ্যালির খোদাই কর্ম ও ধাতুবিদ্যার অনেকটাই এখনো অজানা।

ইন্ডাস ভ্যালির ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন কিছু সিল আবিস্কার করেছেন। আধুনিক যুগের ডাকটিকিটের ন্যায় সিলগুলো বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত হতো বলে মনে করা হয়।সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের নিচে এ ধরনের আরো কিছু নিদর্শন থাকতে পারে বলে প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা। ১৯২২ সালে প্রত্নতত্ত্বিকদের আবিস্কারের আগে পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ এ সভ্যতা সম্পর্কে কেউ জানতো না বললেই চলে।

খ্রিস্টপূর্ব ১৯ শতকের দিকে পরিত্যাক্ত হয় মহেঞ্জোদারো সভ্যতা। তবে ঠিক কী কারণে মহেঞ্জোদারোর অধিবাসিরা অবস্থান ত্যাগ করে তা এখনো অজানা।অনেকের মতে ইন্দো-ইউরোপীয়দের বল প্রয়োগের ফলেই তারা মহেঞ্জোদারো তথা ইন্দোসভ্যালি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তবে এর সপক্ষে তেমন জোড়ালো কোনো প্রমাণ নেই।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ