স্মার্টফোন ছাড়া আজ জীবন প্রায় অচল৷ কিন্তু যখন-তখন তার চার্জ ফুরিয়ে গেলেই মুশকিল৷ আজকাল বাজারে অনেক পোর্টেবল পাওয়ার সেল বাজারে এসেছে বটে, কিন্তু সেগুলোকেও তো চার্জ করতে হয়৷ জার্মানির একটি সংস্থা এক অভিনব সমাধান বার করেছে৷
তৈরি করা হয়েছে এক ডিভাইস তৈরি করা, যার মধ্যে মোবাইল ফোন চার্জ করার জন্য যথেষ্ট শক্তি থাকবে৷ এটা একটা ফুয়েল সেল, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে৷ যেন একটা জেনারেটর৷ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো৷ এটি দিয়ে যখন খুশি মোবাইল ফোন চার্জ করা যায়৷ সঙ্গে শুধু গ্যাস থাকলেই হবে৷
এই ফুয়েল সেলে লাইটারের গ্যাস ভরা হয়৷ গোটা বিশ্বেই এখন তা পাওয়া যায় – এমনকি আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও৷
ড্রেসডেন শহরে ক্যুন-এর কোম্পানি ‘ই-সেলেরন’ গত ৫ বছর ধরে এই সমস্যার সমাধান বার করার চেষ্টা করছিল। লাইটারের গ্যাস চালিত ফুয়েল সেল-এর চাহিদা মেটাতে এখন সেই সংস্থা হিমশিম খাচ্ছে৷ এই প্রযুক্তিতে কোনো ক্ষতিকারক ধোঁয়াও বের হয় না৷ গবেষক সাশা বলছেন, ‘‘ মাত্র এক মাসেই আমরা ১০ হাজারেরও বেশি ডিভাইস বিক্রি করেছি৷ অথচ ক্রেতাদের অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে৷ তাই আমাদের অনুমান, বাজারে একে ঘিরে এখনকার তুলনায় আরও অনেক বেশি আগ্রহ সৃষ্টি হবে৷
চলতি বছর এক লাখ ডিভাইস বিক্রি করতে চায় সংস্থাটি৷ গোটা বিশ্বে প্রায় সাড়ে তিন কোটি স্মার্টফোন রয়েছে৷ অর্থাৎ এর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ ক্যুন-এর কোম্পানি সেই আয়ে ভাগ বসাতে চায়৷ তখন হয়ত আর আলাদা ব্যাটারি চার্জারের প্রয়োজন হবে না, যার নিজেরই চার্জের প্রয়োজন হয়৷
এই মিনি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল অংশই হলো ফুয়েল সেল৷ ‘মেড ইন জার্মানি’৷ উপাদানগুলিও নিজস্ব৷ এতকাল সেরামিক দিয়ে ফুয়েল সেল তৈরি হতো, যা বেশ ভঙ্গুর৷ ডেভেলাপার ইঞ্জিনিয়ার ড. আন্দ্রেয়া স্ট্যোক বলেন, ‘‘সেরামিক খুবই নাজুক৷ তাই আমরা ধাতুর ভিত্তিতে আমাদের ফুয়েল সেল তৈরি করেছি৷ তাই সেটি অত্যন্ত মজবুত৷ হাত থেকে পড়লে ভাঙে না৷ ফলে মোবাইলে এর নানাবিধ ব্যবহার সম্ভব৷”
কোম্পানির প্রধান ক্যুন আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে চান৷ ল্যাপটপের জন্য আরও শক্তিশালী মডেলের পরিকল্পনা চলছে৷ ক্যাম্পিং-এর সময় যে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, তার সিলিন্ডার দিয়ে সেটি চলবে৷ এই প্রযুক্তি হয়ত একদিন ইলেকট্রিক সাইকেল বা গাড়িতেও প্রয়োগ করা হবে৷