অবশেষে সমঝোতায় পৌঁছল ওয়াশিংটন ও তেহরান৷ বহু বাধা পেরিয়ে ইরান ও ছ’টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি৷ নতুন এই চুক্তি অনুযায়ী ইরানের পরমাণু ক্ষেত্রগুলি নিয়মিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাতে সম্মত হয়েছে তেহরান সরকার৷ তবে শুধু পরমাণু কেন্দ্র নয়, ইরানের সামরিক ক্ষেত্রগুলিতেও রাষ্ট্রসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার থাকবে। তবে এই পরিদর্শনকে অযৌক্তিক বলে মনে করলে তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে ইরান প্রশাসন৷ এদিকে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার আগে ট্যুইটারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘যদি পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছতে পারি, তাহলে কূটনীতির জয় হবে৷ অর্থাৎ আমরা সবাই জিতব৷’ তবে, এই পরমাণু চুক্তির সমালোচনা করেছে ইজরায়েল৷ এই চুক্তি ইরানকে গণহত্যার লাইসেন্স দিল বলে তোপ দেগেছেন ইজরায়েলের মন্ত্রী মিরি রেগেভ৷
উল্লেখ্য, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি দীর্ঘ দিনের৷ ১৯৫০-এর দশকে আমেরিকার সাহায্যে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে ছেদ পড়ে ইরানের বিপ্লবের সময়ে৷ শাহকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসা ইরানের মোল্লাতন্ত্র প্রথমে পরমাণু কর্মসূচির গুরুত্ব বুঝতে পারেনি৷ তাই প্রাথমিক ভাবে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময়ে আবার বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়৷ এর পরে জোরকদমে নেমে পড়ে ইরান৷ মূলত রাশিয়া ও চিনের পরোক্ষ সাহায্যে তাদের কর্মসূচি এগিয়ে চলে৷ যদিও ইরান প্রথম থেকেই বলে এসেছে পরমাণু বোমা নয়, সাধারণ মানুষের কল্যাণে পরমাণু শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে তারা৷ কিন্তু, আন্তর্জাতিক পরিদর্শনে বাধাদানসহ নানা কারণে আমেরিকা-সহ তার মিত্রদেশগুলির কাছে বিষয়টি বরাবরই সন্দেহজনক ছিল৷ তাই একের পরে এক নিষেধাজ্ঞা ইরানের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়৷ এর প্রভাবে ইরান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোণঠাসা হয়ে পড়তে থাকে৷ তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধও জারি করে আমেরিকা৷ এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় ইরান সেই পঙ্গুত্বের হাত থেকে মুক্তি পাবে বলেই মত আন্তর্জাতিক মহলের৷