ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সের আলোচিত ওয়েব সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। এখন পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মে যা সর্বোচ্চ ১.৬ বিলিয়ন ঘণ্টার স্ট্রিমিং রেকর্ড গড়েছে। এমনকি তুমুল জনপ্রিয় সিরিজটি এখন নেটফ্লিক্সের বিশ্ব র্যাংকিং তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে।
দক্ষিণ কোরীয় নির্মাতা হোয়াং দং-হিউক পরিচালিত এই সিরিজে দেখা যায়, ঋণে জর্জরিত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ৪৫৬ জন প্রতিযোগী বিশেষ একটি শিশুতোষ খেলায় অংশগ্রহণ করে। জয়ী হলে সে পায় ৩৯ মিলিয়ন ইউএস ডলার; অন্যদিকে হারলেই মৃত্যু! এই জীবন-মরণ খেলায় অংশ নিয়ে মৃত্যুবরণ করে একের পর এক প্রতিযোগী। শেষ পর্যন্ত একজন হয় বিজয়ী। এরপর সে নিজেও এই মরণঘাতী খেলার বিরোধিতা শুরু করে। এই খেলা বন্ধ করার জন্য করে যুদ্ধঘোষণা!
এমন মাস্টারপিস থ্রিলার নির্মাণের অভিজ্ঞতা নিছক ছেলেখেলা নয়। নির্মাতার প্রায় দশ বছরের পরিশ্রমসাধ্য ফল এই সিরিজ। এমনকি তা নির্মাণ করতে গিয়ে কঠিন সময়ে মধ্য দিয়ে গিয়েছেন হোয়াং দং।
বিবিসি সংবাদদাতা জ্যঁ ম্যাকেঞ্জি যখন জনপ্রিয় এ নির্মাতাকে প্রথম কিস্তি নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘প্রথম সিরিজের শুটিং করার সময় আপনি ছয়টি দাঁত হারিয়েছিলেন!’ তখন তাঁকে সংশোধন করে দিয়ে লাজুক হাসিতে হোয়াং দং বললেন, ‘আট কিংবা নয়টা ছিল।’
এই কথাগুলো হোয়াং দং বলছিলেন স্কুইড গেম’র দ্বিতীয় কিস্তির শুটিং সেটে। একসময় ভেবেছিলেন, এটির আর সিক্যুয়েল তৈরি করবেন না! কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন—জানতে চাইলে দ্বিধাহীনভাবে তিনি বললেন, ‘টাকা!’
হোয়াং দং জানান, নেটফ্লিক্স তাঁতে যৎসামান্য অর্থ অগ্রিম প্রদান করেছিল। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম সিরিজটি বিশ্বব্যাপী সফলতা পেয়েছিল ঠিকই, সত্যি বলতে আমি তখন বেশি কিছু পাইনি। তাই দ্বিতীয় সিরিজটি করা আমার জন্য প্রথমটির সাফল্যের একপ্রকার ক্ষতিপূরণ পেতে সহায়তা করবে। এবং গল্পটিও তখন শেষ করতে পারিনি।’
প্রথম সিরিজ নির্মাণের সময় বেশ পরিশ্রম করেছিলেন হোয়াং দং। সেই সময়ের কথা উল্লেখ করে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটি ছিল ৯ পর্বের একটি সিরিজ এবং একমাত্র আমিই চিত্রনাট্য লিখেছিলাম। পুরো সিরিজটি পরিচালনাও করেছিলাম। তাই এটি সত্যিই এক শারীরিক, মানসিক ও মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল।’
বলেছিলেন, ‘তাই আমার প্রচুর চাপ ছিল, যার ফলে প্রোডাকশনের সময় আমার ছয়টি দাঁত পড়ে গিয়েছিল এবং আমি তা বেশকিছু সাক্ষাৎকারেও উল্লেখ করেছি।’
এবার আসছে জনপ্রিয় এ সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি, যা আগামী ২৬ ডিসেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাচ্ছে। মূলত তা আগের গল্পেরই ধারাবাহিকতা। যেখানে প্রথম কিস্তির চরিত্রগুলো আরও বিস্তৃত পরিসরে উঠে আসবে। নির্মাতার ভাষ্য, আগের তুলনায় এবার আরও জমজমাট প্রতিযোগিতা দেখতে পাবেন দর্শকরা।