হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনকালে সৌদি আরবে নিহতদের মরদেহ বাংলাদেশে আনা হবেনা বলে জানিয়েছেন হজ্ব অফিসের সহকারী পরিচালক। কিন্তু কেউ যদি চায় তবে তার স্বজনের লাশ ফেরত আনার ব্যাপারে সরকার সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি। তবে স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা চান পুণ্যভূমি সৌদি আরবেই সমাধিস্থ করা হোক নিহতদের।
অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বাবাকে হারিয়েছেন শেফালি বেগম। তবে, লাশ ফেরত চান না তিনি, চান সৌদি ভূমিতেই দাফন করা হোক তার পিতাকে। আর তাতেই তার বাবার বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে বলে ধারনা তার। শেফালির মত আরও অনেকেই হারিয়েছেন স্বজন। তবে সকলেই চান সে দেশেই দাফন করা হোক তাদের।
এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন, ঢাকা ও সৌদির হজ অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে এবারের হজ মৌসুমে ১১৫ জন বাংলাদেশী প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৩ জন মক্কার মিনায় পদদলিত হয়ে ২জন ক্রেন দুর্ঘটনায় আর বাকিরা অসুস্থ হয়ে।
নিহতদের স্বজনরা কেউই লাশ দেশে আনার বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি বললেও, কেউ চাইলে লাশ ফেরত আনার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান হজ অফিসের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
এবারের হজ মৌসুমে মক্কায় আল হারাম মসজিদে ক্রেন দুর্ঘটনায় শতাধিক এবং মিনায় পদদলিত হয়ে নিহত হন ৭১৭ জন হাজী।
মিনা ট্রাজেডিতে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একই পরিবারের ৬ সদস্য:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের বালিখোলা গ্রামজুড়ে চলছে এখন শোকের ছায়া। ঈদুল আজহায় সৌদি আরবের মিনা ট্রাজেডিতে গ্রামের একই পরিবারের ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ অবস্থায় নিহতদের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। আর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
মহান আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টি লাভে হজ পালনে গত ৩০ আগস্ট সৌদি আরবের মক্কায় যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের বালিখোলা গ্রামের আসাদুল্লাহর পরিবারের ৮ সদস্য। গত ২৪ সেপ্টেম্বর পাথর নিক্ষেপের জন্য মিনায় যান তারা। এসময় পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান আসাদুল্লাহ মিয়া, তার স্ত্রী সাহারা বেগম, মামা ওমর আলী, ভগ্নিপতি ছিদ্দিক মিয়া, চাচাতো বোন আমেনা বেগম ও হাসেনা বেগম।
পরিবারের কাছে তাদের ছয়জনের মৃত্যুর কথা জানান, সৌদি প্রবাসী আত্মীয় ছানাউল্লাহ মিয়া। এ খবর জানার পর স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
এদিকে, নিহতদের মধ্যে এখনো তিনজনের লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায়, নিহত ছয়জনের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ অবস্থায় নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেন।
প্রাণে বেঁচে যাওয়া পরিবারের দু’জন সাহেব আলী ও আলিমুন্নেছা দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।
























