[english_date]

সিরাজ মাস্টারের ফাঁসি, আকরামের আমৃত্যু কারাদণ্ড

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টারের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ প্রামাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসি এবং একটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খান আকরাম হোসেনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় দেন। রায়ে মোট ১ শত ৩৩ ‍পৃষ্ঠা রয়েছে।

সিরাজ মাস্টারের মৃত্যুদণ্ড ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড সাজা কার্যকর করতে সরকারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এই মামলার অপর আসামি আব্দুল লতিফ তালুকদার মৃত্যুবরণ করায় তার মামলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দেয়া হয়েছে।

১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর অভিযোগে সিরাজ মাস্টারের মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ নম্বর অভিযোগে দু’জনকেই খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া আকরামের বিরুদ্ধে আনিত ৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তবে ৭ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়ো তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টার সময় সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার ও খান আকরাম হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে হাজত খানায় আনা হয়। পরে ১০ টা ৫৫ মিনিটে আদালতের এজলাস কক্ষে আসামির কা্ঠগড়ায় আনা হয় এবং ১১ টার দিকে রায় পাঠ শুরু করেন বিচারপতিরা।

এ মামলার তিন আসামির মধ্যে আব্দুল লতিফ তালুকদার গত ২৮ জুলাই কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। তাই তার মামলার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২৩ জুন এই মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হেলাল উদ্দিনসহ ৩২ জন সাক্ষ্য দেয়। আসামিপক্ষ সাক্ষিদের জেরা করে। গত ৬, ৭ ও ২১ এপ্রিল আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন ৫ জন সাফাই সাক্ষী। প্রসিকিউশন সাক্ষিদের জেরা করে।’

গত বছরের ৫ নভেম্বর রাজাকার কমান্ডার ‘বাগেরহাটের কসাই’ নামে খ্যাত কুখ্যাত রাজাকার সিরাজ মাস্টার এবং তার দুই সহযোগী লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেন খাঁনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংগঠিত সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তাদের মধ্যে সিরাজ মাস্টারের বিরুদ্ধে পাঁচটি এবং আব্দুল লতিফ ও খান আকরামের বিরুদ্ধে ৩টি করে অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে বাগেরহাটের শাঁখারিকাঠি বাজার, রনজিৎপুর, ডাকরা ও কান্দাপাড়া গণহত্যাসহ ৮ শতাধিক মানুষকে হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন এবং শতাধিক বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ৩ আসামির সকলকেই আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর ২০০৯ সালে নিমাই চন্দ্র দাস নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এ ৩ আসামিসহ ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের আদালতে একটি মামলা করেন। বাগেরহাটের আদালত এ মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয়। পরে এ মামলাটি আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ