ফিরেছে আদিম স্বভাবে
আদিম স্বপ্নের স্বভাব থেকে কতোটা মুক্ত মানুষ? ঠোঁটের উত্তেজনায় কী খুঁজে পেত ভালোবাসার ভাষা? গুহামুখি জীবনে পাথর তাদের দিয়েছিলো আগুন। গাছের পাতার ঘ্রাণে মুগ্ধ যতোটা না, এর চেয়ে বেশি জরুরি বেঁচে থাকা লতায় পাতায় । মেঘবিজলীর ভয়ে খুঁজেছে দেবতা ; রাতের অন্ধকারে অদৃশ্য ভূতের ছায়াদেহে মৃত্যুভয়। অবনত কৌম মানুষের প্রণাম সূর্যকে। অশ্বারোহীর হাতে নেই আজ তলোয়ার, অন্ধকার ছায়াপথের দূরত্বে। নিজেকে আয়নায় দেখে কী এখনো বিস্মিত? বইয়ের মলাট উল্টালে শব্দের গতি নিয়ে চলে গ্রহান্তরে। স্বপ্নঘোরে সে মানুষ ফিরেছে আবার উলঙ্গ স্বভাবে। মুক্তি হুজুরের তাবিজে!একবিংশের সংবিধানও রাখেনি কথা , প্রস্তাবিত মানুষ অনুচ্ছেদের কোথাও নেই।
জলে ভাসা পদ্ম
তুমুল বৃষ্টির সন্ধ্যায়
প্রথম দেখেছিলাম জ্যোৎস্নাময়ী অই চোখ
ঝাপসা আলোয় যতটুকু দেখা চেহারা
মুগ্ধ করেছে মলিন সৌন্দর্য।
এখানে অথবা ওখানে
খুঁজে পাওনি হৃদয়ের প্রতিবেশী
বন্ধুতাতো দূর সম্পর্কিত অচিন রূপকথা;
ইতিহাসের তীরন্দাজ কাকে বিদ্ধ করেছে?
কী লাভ খোঁজে ভূমিতলে লুকিয়ে রাখা
পুর্বপুরুষের আত্মপরিচয়;
তোমার জীবনে নেই বসন্তঋতুর গল্প
লিঙ্গ প্রশ্নে নদীর স্বভাব পেলেও
জলে ভাসা পদ্ম
তুমি নও রোহিঙ্গা।
লাল সুয়েটার
তখনো ছোঁয়নি প্রকৃতির লাল রঙ
শিশিরসিক্ত ঠোঁট;
শিখিনি কীভাবে দিতে হয় জন্ম
একটি মেয়ের স্বপ্নকে
সুতিকাপড়ে বোনা অক্ষরে
খুঁজি মায়ের আঙুলের ঘ্রাণ!
সেই আমি যাবো আলোর শহরে
আলোর শহরে যাবো বাবার সাথে!
হুইসেল বাজার
অনেক আগে বসে পড়ি আসনে
অপেক্ষার মতো দীর্ঘতম এক ট্রেনে
স্তব্ধতার অবসানে পথচলা শেষ।
বাবার হাত ধরে
নেমে আসি ষ্টেশনের প্লাটফর্ম;
দ্রুততায় ছুটছে গন্তব্য অভিমুখে।
লাল সুয়েটার! আমার আর্তস্বরে
কেন থামেনি জীবন?
বাবা ছুটে ট্রেনের পেছন পেছন
সময়ের গতিপথ হারিয়ে
ফিরে পরাজিত পিতা,
স্নেহভরে তাকানো বাবার চেহারায়
আমি দেখিনি স্নেহ
ক্লান্তিকর পরাজয়ের বেদনা আর লজ্জা।
লজ্জা কিংবা ঘৃণা
ছুঁতে পারে না আজ বাবাকে ;
ঘুমিয়ে থাকা সন্তানের মুখ দেখে
আমাকে বিপন্ন করে দুপুরবেলা
সেদিন লাল সুয়েটার ফেলে এসেছি বলে নয়
আজও ভেসে উঠে সেই পরাজিত মুখ।