
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।স্থানীয় সময় শনিবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানহানি ও দেশদ্রোহিতার আইন দুইটি বাতিল করা উচিত। কেননা, এগুলো আন্তর্জাতিক মানের পরিপন্থি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বিবৃতিতে বলেন, সম্পাদকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনার অর্থ স্পষ্টভাবে দেশটির গণমাধ্যমকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা। দেশটির জাতীয় সংসদের প্রায় সব আসনের এবং সব জাতীয় নির্বাহী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের উচিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তা না হলে বাংলাদেশ স্বৈরাচারী দেশে পরিণত হতে পারে।বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রতিবেদনের কারণে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে সরকার। গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন যে, এই পত্রিকাদুটিতে বিজ্ঞাপন না দিতে বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেশ কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে আল-জাজিরায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধ থেকে এই ধরনের নির্দেশনা পেয়েছেন তারা।সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের সরকার দেশটির সমালোচনাকারী গণমাধ্যমগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, সম্পাদক ও ব্লগারদের কারাগারে পাঠিয়েছে এবং সরকারের বিপক্ষে প্রতিবেদন তৈরি করায় আদালত অবমাননার দায়ে সাংবাদিকদের অভিযুক্ত করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ ও কথপোকথন প্রকাশের দায়ে কোনো রকম বিচার ছাড়াই ২০১৩ সাল থেকে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, মানহানিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। যদি কোনো সংবাদপত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারো সম্মানহানি করার লক্ষ্যে মিথ্যা খবর ছাপায় তাহলে একটি সামাজিক মানহানির মামলা দায়ের করা যেতে পারে। তবে নিজেদের লেখার জন্য কোনো সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর নীতি থেকে বাংলাদেশের সরে আসা উচিত।
বিবৃতি প্রকাশ পর্যন্ত মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৫৪টি মানহানির মামলা এবং ১৫টি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের হয়েছে।