কৌতূহলী দুই ডুবুরি হঠাৎই আবিষ্কার করলেন প্রাগৈতিহাসিক এক অরণ্যের। প্রায় ১০ হাজার বছর আগে এই গহণ অরণ্য বিস্তৃত ছিল আজকের ইংল্যান্ড থেকে জার্মানি পর্যন্ত বিরাট এক এলাকা জুড়ে। পরে, প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে ইংল্যান্ড ও জার্মানির মাঝে জন্ম নেয় উত্তর সাগর। তলিয়ে যায় ওক, বিচ, পাইনের এই জঙ্গল।
সমুদ্রের তলদেশের পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করে শখের ডুবুরিদের সংস্থা ‘সি সার্চ’। এই সংস্থারই দুই সদস্য ডন ওয়াটসন ও রব স্প্রে খুঁজে পেলে তলিয়ে যাওয়া এই আদিম অরণ্যের অবশেষ। উপকূলরেখা থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে, মিনিট পনেরো সাঁতরে ডুব দিয়েছিলেন ওয়াটসন।
ওয়াটসন জানিয়েছেন, জলের নীচে বিরাট আকারের কালো ঢেউয়ের মতো কিছু তার দৃষ্টি পথের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথমে তিনি মনে করেছিলেন নিশ্চয় কোনও জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। কিন্তু, কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুল ভাঙে তার। একটু এগিয়ে দেখেন একটি-দু’টি নয়, তার সামনে অসংখ্য গাছের গুঁড়ি।
প্রাথমিকভাবে ওয়াটসনের মনে হয়েছে, হিমবাহের সামনে পড়ে বিরাট এলাকা জুড়ে অরণ্য ভূমি একেবারে সাফ হয়ে গিয়েছিল অতীতে। পরে, ওই এলাকায় ঢুকে পড়ে সমুদ্রের জল। হিমবাহের চাপে ভূমিশয্যা নেওয়া গছের সারি এ ভাবেই তলিয়ে যায় সমুদ্রে।
পুরাতাত্ত্বিকরা অতীতে এই অঞ্চলেই সমুদ্র থেকে ম্যামথ ও ডাইনোসরের বিপুল সংখ্যক কঙ্কাল উদ্ধার করেছেন। এবার ডুবুরিদের আবিষ্কারে পুরো বিষয়টির মধ্যে সামঞ্জস্য এল।
নৃতাত্ত্বিকরা এতদিন দাবি করেছেন, ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড থেকে ১০-১২ হাজার বছর আগে জার্মানির দিকে মানুষ এসেছিল। কিন্তু, কোন পথ ধরে তারা গিয়েছিল, তা নিয়ে ধন্ধ ছিল। এখন সেই ধোঁয়াশা অনেকটাই কাটল।
ইংল্যান্ড ও জার্মানির মধ্যে ১০ হাজার বছর আগে যে বিস্তৃর্ণ অরণ্য ছিল, সেই অরণ্যই হয়ে উঠেছিল ছিল আদিম মানুষের চলার পথ।