
লা-লিগায় রোববার রাতের ম্যাচে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে নিজেদের ঘরের মাঠে ৬-১ গোলের বড় জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচের ৮১তম মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সা। পেনাল্টি নিতে প্রস্তুত লিওনেল মেসি। তার সামনে লা-লিগায় ৩০০তম গোলের মাইলফলকের হাতছানি। তবে তার পরোয়া না করে অদ্ভুত এক পেনাল্টি থেকে হ্যাটট্রিক করালেন সতীর্থ সুয়ারেজকে। মেসির অদ্ভুত পেনাল্টিকে বলা হচ্ছে শতাব্দীর সেরা পেনাল্টি।
ন্যু ক্যাম্পে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে পেনাল্টি নিতে গিয়ে শট না করে আলতো পাসে বল ডান দিকে বাড়িয়ে দেন মেসি। আর বিদ্যুৎ গতিতে বল জালে জড়ান সতীর্থ সুয়ারেজ। এমন গোলে অবাক পুরো ফুটবল বিশ্ব। তবে মেসির আগেও এমন কা- ঘটিয়েছিলেন বার্সেলোনার আরেক কিংবদন্তি ফুটবলার ইয়োহান ক্রুইফ। ১৯৮২ সালে পেনাল্টিতে শট না নিয়ে পাস দিয়ে গোল করেছিলেন তিনি। মেসির এই পেনাল্টিতে গোলরক রীতিমতো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়েছিল। শুধু গোলরক সেল্টা ডিফেন্ডাররা হতবুদ্ধি, রেফারিরও যেন বাঁশি ফুঁ দিতে খানিকটা দেরিই হলো। সত্যি বলতে বার্সা খেলোয়াড়দের অনেকেই এর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।
তবে এমন যে একটা পেনাল্টি নেওয়া হবে, সেটি অনুশীলনেই ঠিক করা ছিল বলে জানিয়েছেন নেইমার। তবে তা মেসি-সুয়ারেজ নয়, মেসি-নেইমার যুগলবন্দিতেই নাকি হওয়ার কথা ছিল। নেইমার বলেন, এটা আমার জন্যই পরিকল্পনা করা ছিল। আমরা এটা অনুশীলনও করেছি। কিন্তু লুইস বলের কাছে আগে চলে গেছে। যা-ই হোক, ব্যাপার না। ও গোল করেছে, পরিকল্পনাটা তাই কাজেই লেগেছে।
ক্যারিয়ারের ৮৩টি পেনাল্টির ১৭টি মিস করা মেসির পেনাল্টি নিয়ে আলোচনা এই প্রথম নয়। তবে এবারেরটি যেন ছাপিয়ে গেল বাকি সব কিছুকেই। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক তো এরই মধ্যে এর নাম দিয়েছে ‘শতাব্দীর সেরা পেনাল্টি’। মেসি-সুয়ারেজের যুগলবন্দির এই গোল একই সঙ্গে প্রশংসা আর বিতর্ক তৈরি করেছে। প্রতিপরে প্রতি যথাযোগ্য সম্মান দেখানোর প্রশ্নও উঠেছে। এভাবে গোল করা তো প্রতিপক্ষের অপমান। তবে এমনটা মনে করছেন না সেল্টা কোচ এদুয়ার্দো বেরিজ্জোও। তিনি বলেন, এটা প্রতিপক্ষকে অসম্মান নয়। তবে এমন পেনাল্টি নেওয়া হতে পারে, সেটা আমিও ভাবতে পারিনি।
ম্যাচশেষে বার্সেলোনার কোচ লুইস এনরিকে বলেন, ক্রুইফের সেই গোলটা তো আমাদের সবারই মনে আছে। আমি হলে অবশ্য এটা করার সাহস পেতাম না। আমি সরাসরি বলে কিকই নিতাম। এমন গোল কি করা উচিত? এনরিকের উত্তর, কেউ এটা পছন্দ করবে, কেউ করবে না। তবে বার্সার খেলোয়াড় কিংবা এই ক্লাবের সদস্যরা মনে করে, শিরোপা জয়ের চেয়েও মুগ্ধকর খেলা দিয়ে ফুটবলটা উপভোগ করা জরুরি। আমাদের ফুটবল উপভোগ করতে হবে, প্রতিপক্ষকে সম্মানও দেখাতে হবে। দেখাতে হবে, আমরা যেভাবে খেলি, এতে আমরাই সেরা।