১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লন্ডনে মোদীর সঙ্গে বৈঠকের জোর লবিং বেগম জিয়ার

বিএনপি হাইকমান্ড মনে করছে, তাদের এখন মোদীর আশীর্বাদ লাভ ছাড়া বিকল্প নেই। আন্দোলনে সরকারকে টলানো যাবে-এমন দৃঢ় মনোবল রাখতে পারছেন না তারা। বিএনপির ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ সদস্যরা খালেদা জিয়াকে বুঝিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ভারতের সিগন্যাল ছাড়া বর্তমান সরকারের বিষয়ে নাক গলাবে বলে মনে হয় না। তাই বিএনপি হাইকমান্ড চাচ্ছে- নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এই সরকারের কাছ থেকে একটি নির্বাচন আদায়ের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ভারতীয় চাপ। এছাড়া গত্যন্তর দেখছেন না তারা।

যার ফলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য জোর লবিং করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মোদী তিন দিনের সফরে লন্ডনে পৌঁছেছেন। এই সফরকালে খালেদা জিয়া তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন। বিজেপির লন্ডন শাখাও বিএনপির পক্ষে চেষ্টা-তদবির করছে বলে জানা গেছে।

লন্ডনে বেগম জিয়ার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া লন্ডন পৌঁছানোর আগে থেকেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার দল বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন দলের লবিষ্টরা। এখন লবিষ্টরা বেগম জিয়া-মোদী বৈঠকের জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। বিএনপির লবিষ্টরা বিজেপিকে বুঝাচ্ছেন যে কংগ্রেস আওয়ামী লীগ বান্ধব আর বিএনপি বিজেপি বান্ধব। তাই বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সেটা বিজেপির জন্য সুবিধাজনক।

প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি আনন্দিত ছিল। তারা আশাবাদী ছিলো যে দেশে একটি অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিজেপি সরকার আওয়ামী লীগের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। তবে বাস্তবে মোদীর সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কংগ্রেসের রেখে যাওয়া উষ্ণ সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষায়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক আরো দৃঢ় হওয়ায় কিছুটা হতাশা নেমেছে বিএনপিতে। এরপর কিছুদিন বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় বিএনপির লবিষ্টরা। মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় বেগম জিয়া তার সঙ্গে সাক্ষাত্ করে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া দেখান। এখন বেগম জিয়া আশা করছেন, লন্ডনে মোদীর সঙ্গে বৈঠক হলে তিনি তার কাঙ্ক্ষিত স্বার্থ হাসিল করতে পারবেন। দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন দিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সহযোগিতা পাবেন।

এদিকে ঢাকার দলীয় একটি সূত্র দাবি করেছে, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ দুই মাস লন্ডনে অবস্থানের সর্বশেষ কারণ হলো নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষা। সেখানে বেগম জিয়ার চিকিত্সা মোটামুটি শেষ হলেও দেশে ফেরার চেয়ে তিনি বিদেশে অবস্থান করে বহির্বিশ্বের মিত্রদের সঙ্গে লবিং জোরালো করাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিত্সার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। ১০ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসার কথা ছিল তার। তবে তারিখ পরিবর্তন করা হয়। এমিরেটস এয়ারলাইন্সে নতুন করে বুকিং দেয়া হয়েছে ১৬ নভেম্বর। এর আগেও কমপক্ষে চারবার খালেদা জিয়া দেশে ফেরার তারিখ পরিবর্তন করেছেন।

এদিকে বেগম জিয়া মোদীর সঙ্গে  বৈঠকের চেষ্টা করছেন এমন খবর নেই দলটির ঢাকার নেতাদের কাছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা জানান, মোদীর সঙ্গে বেগম জিয়া বৈঠক করতে চান। এজন্য দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন সিনিয়র নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী লন্ডনে অবস্থান করছেন। যিনি বেগম জিয়া না ফেরা পর্যন্ত লন্ডনে থাকবেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ