[english_date]

লতিফ সিদ্দিকীর আলতিফ সিদ্দিকীর আসন শূন্য ঘোষণাসন শূন্য ঘোষণা

জাতীয় সংসদে বক্তব্যের মাধ্যমে সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেওয়া আওয়ামী লীগ ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কৃত আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। এর ফলে সাবেক এই মন্ত্রীর নির্বাচনী আসন টাঙ্গাইল-৪ এখন সংবিধান অনুযায়ী শূন্য বলে বৃহস্পতিবার সংসদে জানিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আসন শূন্য ঘোষণা সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের পর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হলে উপ-নির্বাচনের ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার সংসদে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী সংসদকে লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ ও তার নির্বাচনী আসন শূন্য হওয়ার বিষয়টি জানান স্পিকার।

শিরীন শারমিন বলেন, “দশম জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী গত ১ সেপ্টেম্বর সংসদ কক্ষে উপস্থিত হয়ে স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পদত্যাগপত্র আমার কাছে পাঠিয়েছেন। আমি সেটা গ্রহণ করেছি।”

“সংবিধানের ৬৭ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তার পদত্যাগপত্র আমার কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার আসন শূন্য হয়েছে।”

 গত মঙ্গলবার আবেগঘন বক্তব্য শেষে আরদালির মাধ্যমে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে সংসদ থেকে বের হয়ে যান লতিফ সিদ্দিকী। এদির সন্ধ্যা সাতটা ২৪ মিনিট থেকে সাতটা ৩৯ মিনিট পর্যন্ত সংসদে বক্তব্য দেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার পর মন্ত্রিত্ব হারান এবং দল থেকে বহিষ্কৃত হন লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগ থেকে তাঁর সংসদ সদস্যপদ বাতিলের আবেদন করা হলে স্পিকার তা নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনে পাঠান। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নেই বলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তিনি। হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর তিনি লিভ টু আপিল করলে ২৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করেন। একই দিন তিনি নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে বলেন, তিনি নিজেই পদত্যাগ করবেন। এ বিষয়ে শুনানির প্রয়োজন নেই।

১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকী সংসদে ঢোকেন। সংসদ নেতা শেখ হাসিনা তখন উপস্থিত ছিলেন না।

লতিফ সিদ্দিকী পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়ানোর জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্পিকার বলেন, ‘মাননীয় সদস্য, আপনি একটু পরে কথা বলেন।’ এ সময় স্পিকার বিরোধীদলীয় নেতাকে কথা বলার সুযোগ দেন।

এরপর লতিফ সিদ্দিকীকে কথা বলার সুযোগ দিলে তিনি বলেন, ‘আমি মুসলমান, আমি বাঙালি, আমি আওয়ামী লীগার। এ পরিচয় মুছে দেওয়ার মতো কোনো শক্তি পৃথিবীর কারও নেই। কারণ, এ আমার চেতনা, আমার জীবনবেদ, প্রাণের রসদ, চলার সুনির্দিষ্ট পথ।’

নির্বাচন কমিশনে পাঠানো স্পিকারের চিঠির বিষয়ে আপত্তি তুলে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় বর্ণিত নির্দেশনা হলো কোনো ব্যক্তির সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও থাকা বিষয়ক। এ ক্ষেত্রে ৬৬ অনুচ্ছেদের ২ দফা এবং সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের নির্দেশনার ব্যাপারটি স্পষ্ট। স্পিকারের চিঠিতে সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন ও সংবিধানের অপব্যাখ্যা হয়েছে। স্পিকার সংসদ সদস্যের আসন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া যথাযথ কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যায়।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘মনে হয়েছে, আমার নেতার অভিপ্রায়, আমি আর সংসদ সদস্য না থাকি। কর্মী হিসেবে নেতার একান্ত অনুগত ছিলাম। বহিষ্কৃত হওয়ার পর এর ব্যত্যয় কিংবা ব্যতিক্রম সমীচীন মনে করি না। আমার প্রতিবাদ ছিল প্রতিকার পাওয়ার, এখন দ্বিধাহীন কণ্ঠে কারও বিরুদ্ধে কোনো ঘৃণা-বিদ্বেষ উগড়ে না দিয়ে কোনো অভিযোগ উত্থাপন না করে হৃষ্টচিত্তে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের আসন ১৩৩, টাঙ্গাইল-৪ সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ 

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ