জলগল্প
একটি সকাল দরজা খুলতেই চোখের ক্যামেরায় এক সমুদ্র মানুষ জলহোলি খেলে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে এক এক ফ্ল্যাটে মুখ খুলে এক একটি সরোবর! লাল কাঁকড়ার ঝাঁক ছুটে চলে সৈকতের বুক ঘেঁষে। সমুদ্র ভিজিয়ে দিয়ে যায় কোন চোখের বসন্ত অথবা হেমন্তের চোখ। কোন ঘরকুনো শামুকের হলুদ দুপুর সেজে উঠে জলকাব্যের গন্ধরাজে। তটিনী আর তৃষ্ণার মত- একে অন্যের সুহৃৎ যেমন!
সদ্যজাত নবপল্লবে পঙ্কজ আভায় শৃঙ্গধর লিখে রাখে হৃদ্যতার বৃক্ষে-”দেহসমুদ্র লতায় জড়িয়ে জন্ম নিচ্ছি এক জলজীবন। জল জোস্নায় কাঁধামাখা সাবান ভিজিয়ে ফেনা তুলে বানিয়েছি এক জলাকাশ। জলরঙে দিন ডুবিয়ে দীর্ঘ হচ্ছি একবুক জলের আশায়। ক্রমশ ঢুকে পড়ছি জলগুহায়- ”
প্রবৃত্তি স্নিগ্ধ হয়। মেঘের পাঠশালায় লুকোয় চন্দ্র-সূর্য। অহংকার আলোকিত হয় বটে অন্তরে, বিকশিত ভঙ্গিমা পথ বেঁকে যায় মেঘের কোটরে। অনুতাপ জন্মায় পরিশুদ্ধ বারিধারায় অবিমিশ্রতার সংজ্ঞা দিয়ে যায় উড়ন্ত জলড্রপার…। ক্যাকটাসের কাঁটায় কাঁটায় ফুটে ওঠা ভায়োলিনে জমাট বাঁধা যত নিত্য প্রলাপ কুয়াশার আঁচলে বৃদ্ধ হয়, সেখানে ও মুক্তো শিশির স্বর্গীয় নির্যাস দিয়ে যায়। যে নির্যাসে মহীয়সী হয় মা,মাতা,জননী- ! বেলা শেষে এক পৃথিবী সূর্য বিসর্জিত হয় সমুদ্র মন্থনে। আমাদের কলমে জায়গা করে নেয় গোধূলি,ক্রমশ নিশীথিনী। রাজকন্যর মতন গন্ধরাজ পোশাকে ফুটে উঠে চাঁদ- অণু পরমাণু তে একসার হয়ে আমরা মুগ্ধ হই। মুগ্ধতার ভাণ করি।
লিখে রাখি সব উপকথা- লিখতে লিখতে এক একটি গল্প হয়। যেখানে শেষ নেই, কেবলি ভোর আসে কেবলি শুরু!
এমনি একটি ছায়ার আকাশে ফুটে ওঠে অগণিত জীবন। রাতের সমুদ্রে বিছানা পেতে যারা তৃপ্ত হয়, যুবক যুবতী হয়। বৃদ্ধ হয়না। পবিত্র সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ হয়। জোস্নার আঁধারে জলসংগীতে আমরা মুগ্ধ হই। মুগ্ধতার ভাণ করি- !