[english_date]

রাজধানীসহ সারা দেশে কড়া নিরাপত্তা

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য বারের চাইতে এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কারণ গত কয়েকমাসে ধর্মীয় উগ্রপন্থিরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন মতালম্বীদের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে সেরকম কোনও থ্রেট না থাকলেও জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করতে বলা হয়েছে।

সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে সন্ধ্যার আগেই নগরবাসীকে ঘরে ফেরার অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে খোলা জায়গায় কোনও অনুষ্ঠান উদযাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে রাজধানীর সব বারগুলোকে। হোটেল-মোটেল বা ঘরোয়া কোনও অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হলেও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাতে হবে। পুলিশ এসব আয়োজনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ঢাকার বাইরে মেট্রোপলিটন এলাকা ও জেলার পুলিশ সুপারদের কাছেও একই নির্দেশনা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। ইতিমধ্যে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, বিদেশি নাগরিক খুন ও খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের যাজকদের হত্যার হুমকি, কর্তব্যরত পুলিশের ওপর আক্রমণসহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় খিষ্টীয় নতুন বর্ষ উদযাপনেও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত রাজধানীতে নববর্ষ উদযাপনের জন্য নানা রকম পার্টি বা কনসার্টসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে। এবার খোলা জায়গায় কোনও অনুষ্ঠান না করার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, ও হাতিরঝিল এলাকা থেকে সন্ধ্যার আগেই ফাঁকা করে দেয়া হবে। সন্ধ্যা ৬টার পর পরিচয়পত্র ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না।

সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকায় ডিএমপি পুলিশের ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করছে। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও এলাকায় নজরদারি করা হবে। সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায়। থার্টি ফার্স্টের রাতে ওই এলাকায় বহিরাগত কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না। গুলশান-বারিধারা-বনানী এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলী রোড খোলা রেখে বাকি সব সড়ক বন্ধ রাখা হবে। ডিএমপির কর্মকর্তারা বলছেন, গোটা রাজধানীতে আগের চাইতে কয়েকগুণ বেশি তল্লাশি চৌকি বসানো হবে। কূটনৈতিকপাড়া, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।

কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই তাকে তল্লাশি করা হবে। ডিবির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ সোয়াত টিম, ক্রাউড কন্ট্রোলের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা উপকরণ প্রস্তুত থাকবে। পাশাপাশি নগরজুড়ে থাকবে বিপুল সংখ্যক নারী পুলিশ। থার্টি ফার্স্ট নাইটে দুর্ঘটনা এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ যাতে মদ্যপান করে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেসব বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মারুফ হোসেন সর্দার জানান, ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে কোনও বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে এবং কেউ যেন কোনও নাশকতা করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে র‌্যাবের সবগুলি ব্যাটালিয়নকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। র‌্যাবের বিভিন্ন ইউনিটগুলি গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে টহল ও চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করবে। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকায় র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করা হবে। যে কোনও ধরনের নাশকতা ঠেকাতে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সেজন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকধারী র‌্যাব সদস্যের পাশাপাশি রাজধানীসহ সারা দেশে সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ