রাজধানীতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে শব্দ দূষণ। আর শব্দ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার অভিযোগ সাধারণ মানুষের। অনিয়ন্ত্রিত শব্দ দূষণে বিভিন্ন কঠিন রোগের পাশাপাশি ভবিষ্যতে অসুস্থ প্রজন্ম সৃষ্টির আশঙ্কা ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের। আগামীতে শব্দ দূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি কর্তৃপক্ষের। এখনো ছাড়েনি সিগন্যাল। অথচ অধিকাংশ চালক অকারণে বাজিয়ে যাচ্ছেন উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী নানা ধরনের হর্ন।রাস্তায় অনবরত শব্দ দূষণের বড় ভুক্তভোগী ট্রাফিকদের কান ও মন দুটোই তাই অনুভূতিহীন। ট্রাফিক জানায়, বাসায় যাওয়ার পরও দেখা যায় কানের ভেতর শব্দ হচ্ছে। টিভি দেখতে হলে আমাদের সাউন্ড বেশি দিয়ে শুনতে হয়। অনেক সময় কানে ব্যথা করে।
আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময় ও স্থান উপেক্ষা করে যখন তখন অলিতে গলিতে উচ্চ শব্দের যন্ত্র দিয়ে চলছে বসতি নির্মাণ। মাইকিং থেকে শুরু করে এমন নানা ধরনের শব্দ দূষণ রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ জনসাধারণের
২০০৬ সালের শব্দ দূষণ নীতিমালা অনুযায়ী ৫ ভাগে বিভক্ত এলাকায় সর্বোচ্চ শব্দসীমা নির্ধারণ করা হলেও পবার গবেষণায় দেখা গেছে, সব এলাকায় শব্দ দূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ সীমার থেকে দেড়গুণ থেকে দিগুণ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইউনিসেফ ও বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ৩০টি কঠিন রোগের অন্যতম উৎস শব্দ দূষণ।ক্রমাগত বাড়তে থাকা শব্দের মাত্রা আগামীতে অসুস্থ প্রজন্মের জন্ম দিবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
নাক, কান ও গলারোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জোনায়েদ রহিম বলেন, ‘কোন মানুষ যদি ৮ ঘণ্টা এই পরিবেশে থাকে তাহলে তার কানে শব্দ দূষণের সমস্যা দেখা দিবে।’ শব্দ ও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি বাপা’র কো-কনভেনর সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা প্রণয়ন করার পর বিনা কারণে হর্ন যেন না বাজায় সেটা কন্ট্রোল করার জন্য ঢাকার একটা রাস্তায় এর প্রয়োগ আমরা দেখেছি। এছাড়া এর প্রয়োগ আমরা আর কোথাও পাই নাই।’
সরেজমিনে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকলেও ভবিষ্যতে শব্দ দূষণ ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রীর। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, ‘শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য সবার আগে আমাদের জনসাধারণের আরও সচেতন হতে হবে।
যেখানেই এ ধরনের আইন লঙ্ঘন হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা তৎপর।’আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে রাজধানীর প্রায় অর্ধেক মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা ৩০ ডেসিবল পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও অভিমত বিশেষজ্ঞদের।