১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মেয়েদের মন পাওয়ার কৌশল শেখানোর স্কুল!

৪১ বছরের সুঠামদেহী পুরুষ তাকাশি সাকাই। হাসিটা বেশ সুন্দর, আছে ভালো একটা চাকরিও। কিন্তু এখনো কপালে বিয়ে জোটেনি। এমনকি এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের হৃদয়ঘটিত বা প্রেমঘটিত সম্পর্কও হয়নি তাঁর জীবনে। এমন নয় যে তিনি প্রেমে পড়ার বা বিয়ে করার চেষ্টা করেননি, কিন্তু সফল হননি। তাকাশির মতো জাপানে এমন বহু পুরুষ রয়েছেন, যাদের কপালে বিয়ে জোটেনি বা জীবনে আসেনি প্রেম।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো, ২০১০ সালে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চের এক জরিপে দেখা গেছে, ত্রিশোর্ধ্ব পুরুষদের এক-চতুর্থাংশ এখনো কুমার। তারা কোনো ধরনের যৌন সম্পর্কে জড়ায়নি। ১৯৯২ সালের একই ধরনের একটি জরিপের তুলনায় এই হার তিন শতাংশ বেশি।

এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে মূলত জাপানের অর্থনীতির ধীরগতির বিষয়টি যুক্ত। শক্তিশালী অর্থনীতির এই দেশটিতে হঠাৎ করেই আর্থিক মন্দাভাব দেখা দেয়। যার প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগে। সংকুচিত হয়ে পড়েছে চাকরির বাজার। ঘটক ইয়োকো ইতামোতোও এ ব্যাপারে একমত। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক মন্দাভাবের কারণে জাপানের পুরুষদের কপাল পুড়েছে। বউ খোঁজার বদলে পূর্ণকালীন একটি চাকরি বা আর্থিক নিরাপত্তার সন্ধানেই তার সময় কেটে যায়। মনের মতো চাকরি না থাকায় অনেক পুরুষ অর্থনৈতিক অনাস্থায় ভোগেন, বিয়ে করার সাহস করেন না। গত দুই দশকে বিয়ের বিষয়টি জাপানের পুরুষদের জন্য বেশ কঠিন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪৯ বছর বয়সী এক স্থপতি নারীহীন জীবনের কষ্টের কথা জানিয়ে বলেন, জীবনে দুবার প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। ২৫ বছর বয়সের দিকে প্রথমবার এক নারীর সঙ্গে মন দেয়া-নেওয়া হয় তার। আবার প্রায় দুই দশক পর আরেক নারীর প্রেমে পড়েন তিনি। তবে দুজনই তাকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে চলে যায়।

অকৃতদার তাকাশি সাকাই জীবনে একজন নারী সঙ্গী পাওয়ার চেষ্টার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমার কখনো কোনো মেয়েবন্ধু ছিল না। কখনোই না। এমন না যে আমি মেয়েবন্ধু বিষয়ে আগ্রহী ছিলাম না। কিন্তু আমি ঠিক জায়গাতে পৌঁছাতে পারিনি।’

আশার কথা হচ্ছে, তাকাশির মতো এই বয়সের পুরুষদের জীবনে যাতে নারীর আগমন ঘটে সে বিষয় নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে জাপানে। শিনগো সাকাৎসুমি নামের একজন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, যেখানে নারীদের মন পাওয়ার কৌশল শেখানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি মনে করে যৌন পরিপক্বতা মানেই সামাজিক পরিপক্বতা। সুন্দর সমাজের জন্য নারী-পুরুষের সুন্দর সম্পর্ক প্রয়োজন। তাকাশি ও তার মতো আরও অনেকে এখানে ভর্তি হয়েছেন। শিখছেন নারীর মন পাওয়ার কৌশল। আর অপেক্ষায় আছেন পছন্দের জীবনসঙ্গীটি খুঁজে নেওয়ার।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ