পাইওনিয়র লিগ কমিটির সভায় বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন থাকেন না। কিন্তু গতকাল সভার পর তিনি লিগ কমিটির বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধিদের বৈঠকে গিয়েছিলেন। তার উপস্থিতি বাড়তি প্রেরণা দেয় ক্লাবগুলোকে। সভা ছিল পাইওনিয়র লিগ নিয়ে।
কিন্তু সেখানে কাজী সালাহউদ্দিন দুটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন ক্লাবগুলোর কাছে। প্রথম প্রস্তাব পাইওনিয়র ফুটবলে মেয়েদের লিগ চালু করা যায় কিনা। সালাহউদ্দিন মনে করেন পাইওনিয়র ফুটবলে অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল লিগ চালু হলে নারী ফুটবলে খেলোয়াড় সংকট কমে আসবে। এখন দেশে যে পরিমাণ খেলোয়াড় রয়েছে তা দিয়ে নারী ফুটবলের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। নারী ফুটবলের প্রসার ঘটলেও খেলোয়াড় সংকট রয়েছে।
সালাহউদ্দিন ক্লাব প্রতিনিধিদের বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পে ৬০ জন নারী ফুটবলার রয়েছেন। এটা কি যথেষ্ট? মোটেও না। পাইওনিয়র ফুটবলেও যদি নারী লিগ আয়োজন করা যায় তাহলে খেলোয়াড় উঠে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা (ক্লাব কর্মকর্তা) ভেবে দেখেন। এটা করা যায় কিনা। আমি প্রস্তাব দিলাম। আপনাদের ওপর নির্ভর করবে।’
গতকাল বিকালে পাইওনিয়র লিগ কমিটির সভায় নির্ধারণ হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৫ লিগ হবে। সেটি কবে? এখনো বলেনি। তবে গতকালকের সভায় বলা হয় এবার ৫৫টি দল রেজিস্ট্রেশন করেছে। গতবার খেলেছে ৪৩ দল। এবার ৫ ভেন্যুতে পাইনিওয়র লিগ মার্চে শুরু হবে। এই লিগ নিয়ে বাফুফে সভাপতি আরো একটি প্রস্তাব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ক্লাবগুলো ভালো খেলোয়াড় খুঁজে বের করে। তারা একজন ফুটবলারের পেছনে শ্রম দিচ্ছে। খেলোয়াড়কে মাঠে এনে দাঁড় করাচ্ছে। বাফুফের যে এলিট একাডেমি রয়েছে সেখানে অনূর্ধ্ব-১৫ খেলোয়াড়দের ক্যাম্প রয়েছে। এই ক্যাম্পে আরো কিছু ফুটবলারকে সুযোগ দিতে চায় এলিট একাডেমি। সালাহউদ্দিন ক্লাব কর্মকর্তাদের পরিশ্রমটাকে উজ্জীবিত করতে প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন, ‘পাইওনিয়র লিগের কোনো খেলোয়াড় যদি এলিট একাডেমি গ্রহণ করতে চায় তাহলে নিতে পারবে। এলিট একাডেমিতে একজন ফুটবলার সুযোগ পাওয়াটা খেলোয়াড়ের জন্য আনন্দের, তেমনি ঐ ক্লাবের জন্য গৌরবের। ক্লাবও মনে করে তার একজন ফুটবলার এলিট একাডেমিতে সুযোগ পেয়েছেন।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই বিষয়টি এখানেই থাকুক আমি সেটি চাই না। আমার কথা হচ্ছে একজন ফুটবলার যদি এলিট একাডেমি গ্রহণ করে তাহলে সেই ফুটবলারের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্লাবকে দেওয়া হবে। একজন নিলে ৫০ হাজার, তেমনি ৫ জন নেওয়া হলে আড়াই লাখ টাকা পাবে।’ এই দুটি প্রস্তাব বাফুফে সভাপতি দিয়েছেন পাইওনিয়র লিগ কমিটির টেবিলে।
বাফুফে সভাপতির প্রস্তাব সহজেই নিয়ম হয়ে যায়। কিন্তু সালাহউদ্দিন প্রস্তাব দিয়েছেন। ক্লাবগুলো যদি গ্রহণ করে সেটি ফুটবলের জন্যই মঙ্গল হবে মনে করছেন ক্লাব কর্মকর্তারা। যদিও ইমরুল হাসান সম্প্রতি প্রিমিয়ার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন সেই কারণে মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন না জানিয়েছিল বাফুফে।
মহানগরী লিগ কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ভুঁইয়া শাহীন জানিয়েছে ইমরুল হাসানই মহানগরী লিগ কমিটির চেয়ারম্যান। বলে জানিয়েছেন ইমরুল হাসান এখনো চেয়ারম্যান রয়েছেন। শাহীন জানান, ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ পাইওনিয়র ফুটবল লিগের মতো মেয়েদের নিয়ে একই আদলে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার প্রস্তাব দিয়েছেন মাহফুজা আক্তার কিরণ। সেই বিষয়টি বাফুফে সভাপতির মাধ্যমে কালকের সভায় তোলা হয়।
পাইওনিয়র লিগ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান শাহীন বলেন, ‘এই লিগের প্রস্তাবটা খুবই ভালো। তবে কাদের অধীনে খেলাটা চলবে সেটি একটি বিষয়। মহিলা ফুটবল কমিটি আছে এবং মহানগরী ফুটবল কমিটির অধীনে চারটা লিগ হয়, এখন সেখানে মেয়েদের পাইওনিয়র লিগটা হবে নাকি অন্য কোনো মাধ্যমে হবে সেটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’