[english_date]

মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে ১২ বছর পুলিশে চাকরি, কনস্টেবল গ্রেপ্তার

দীর্ঘ ১২ বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার নাতি বলে মিথ্যা পরিচয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে মো. শেখ সুমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতারণার অভিযোগ ওঠা ওই পুলিশ সদস্যের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে।

রোববার (২ মার্চ) সকালের দিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম। এর আগে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে শুক্রবার বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফিরলে আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ওই পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সুমন। ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন। প্রকৃতপক্ষে, হোসেন মিয়া তার দাদা নয়। এই প্রতারণার বিষয়ে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগের পর তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. সুমন ২০১২ সালের ৩ জুলাই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পরীক্ষার সময় তার প্রতিবেশী হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। পরবর্তী বিধি মোতাবেক পুলিশ ভেরিফিকেশনের (ভিআর) পর ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ থেকে কনস্টেবল পদে চাকরি করে আসছিলেন।

প্রকৃতপক্ষে মো. সুমনের দাখিল করা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়া (অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য) তার দাদা নন। সুমনের দাদার নাম আলতাফ আলী হোসেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়ার নাতি না হয়েও ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়ে যাবতীয় বেতন ও রেশনসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

কুমিল্লার বুড়িচং থানায় কর্মরত থাকা কনস্টেবল সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলাকালেই গত বছরের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। ২১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ