[english_date]

মিয়ানমারের ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকবেন ট্রাম্প

মিয়ানমার জান্তা সরকার সে দেশের রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীর উপর ব্যাপক নির্যাতন করে গণহত্যা চালাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারা বিশ্ব আজ সোচ্চার। পৃথিবীর সভ্য জাতি তা মেনে নিতে পারেনা। বার্মার প্রতি ঘৃণাই জানাচ্ছে সারাবিশ্ব। রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গণহত্যার নিন্দা চলছে সারা বিশ্বে। এবার মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এতে করে দেশটি ব্যাপকভাবে নানা সমস্যার জর্জরিত হয়ে পড়ছে। সারা বিশ্বের সভ্য রাস্ট্রগুলো বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সহমর্মিতা করছে। প্রশংসা করছে। জাতীসংঘে যোগ দেয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে এ দুর্যোগের দিনে বাংলাদেশের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সোমবার স্থানীয় সময় সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সংস্কার বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে ট্রাম্প এ কথা জানান। পরে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

শহীদুল হক জানান, ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বলেছেন, মিয়ানমারের ইস্যুতে আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। এটা কিভাবে সমাধান করা যায় আমরা দেখবো।

দুই নেতার কুশল বিনিময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিষয়টি উঠে আসে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানতে চান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ভালো করছে। তাতে তিনি (ট্রাম্প) সন্তোষ প্রকাশ করেন। জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ১৯৩ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান নিউইয়র্ক শহরে রয়েছেন। অধিবেশনের ফাঁকে ‘জাতিসংঘ সংস্কার: ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে জাতিসংঘ তার পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না।

তিনি মানুষের জন্য আরও বেশি বিনিয়োগ এবং আমলাতন্ত্রের জন্য কম বিনিয়োগের আহ্বান জানান। আরও বেশি সক্ষমতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেসের ঘোষণা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সভাটি শেষ হয়। ১২৮টি দেশ এ ঘোষণায় সই করে বলে জানায় জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, আমরা আপনার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি। পুরো পদ্ধতিটাকে দেখা এবং উপায় খুঁজে বের করার মাধ্যমে উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, শান্তি ও নিরাপত্তায় আরও ভালো কিছু করতে পারে জাতিসংঘ।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটা জাতিসংঘ চাই, যাতে পুরো বিশ্বের মানুষের আস্থা থাকবে। আমলাতন্ত্রকে ছুড়ে ফেলতে হবে, সেকেলে পদ্ধতিগুলোকে পরিবর্তন করতে হবে এবং জাতিসংঘের মূল মিশনকে সামনে এগিয়ে নিতে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি ভবনের নর্থ ডেলিগেটস লাউঞ্জে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব গুতিয়েরেস আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

বিকেল ৩টায় জাতিসংঘ সদরদপ্তরের কনফারেন্স রুম-৪ এ তিনি অংশ নেবেন ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে কেউ পিছিয়ে পড়বে না’ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের সর্বোচ্চ পরিষদের শীর্ষ পর্যায়ের গোলটেবিল আলোচনায়। বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে পরিবেশের জন্য বৈশ্বিক চুক্তি বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন।

একইদিন ‘রোহিঙ্গাদের ওপরে মিয়ানমার সরকারের সহিংসতা, নিপীড়ন এবং এর ফলশ্রুতিতে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা’র বিষয়ে ওআইসির যোগাযোগ গ্রুপের সভায় অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। বিকেল ৬টায় বেকহাম প্যালেসে যুক্তরাজ্য ও মাল্টার প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত কমনওয়েলথ রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যায় ৭টায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
বিকেল সাড়ে ৩টায় নেদারল্যান্ডের রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পুনর্গঠন এবং সংস্কারের বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতি ইথিওপিয়া আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের (রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান পর্যায়ের) উন্মুক্ত বিতর্কেও অংশ নেবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পসন্ধ্যা সাতটায় হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং।

বিকেল সাড়ে ৭টায় গ্র্যান্ড হায়াতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক সদানন্দ ধুমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ