
কেউ মানিব্যাগ বলেন, কেউ বলেন ওয়ালেট। তবে যে যেটিই বলুক না কেন, প্রায় সবাই এটিকে পেছনের পকেটে রাখতে পছন্দ করেন। কেউ কেউ আবার ফ্যাশন-স্টাইলের জন্যও পেছনের পকেটে একটু বড়সড় ধরনের মানিব্যাগ রাখেন। অজ্ঞাত থেকে কিংবা ফ্যাশন থেকে পেছনের পকেটে দীর্ঘদিন ধরে মানিব্যাগ রাখার অভ্যাস থেকেই নিজের ক্ষতি হতে পারে। যা ভাবনাতেই নেই অনেকের।
পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখার প্রভাব নিয়ে ফ্লোরিডা ইনজুরি অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রায়ই এমন রোগীদের দেখা যায়, যাদের পিঠের নিচে ব্যথা, সায়াটিকা এবং অঙ্গবিন্যাস ও অন্যান্য সমস্যায় বুগছেন। এ ক্ষেত্রে খুব সাধারণ একটি অভ্যাসকে দায়ি হিসেবে দেখা হয়। এসব ব্যক্তিরা তাদের পেছনের পকেটে মানিব্যাগ বহন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেছনের পকেটে মানিব্যাগ বহন করা সহজ ও সুবিধাজনক এবং ক্ষতিকারক মনে হতে পারে। তবে এর ক্ষতিকারক দিকই বেশি। পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখার কারণে মেরুদণ্ডের স্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
অসামঞ্জস্যিক সমস্যা: পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রেখে বসলে, বিশেষ করে মানিব্যাগ যদি মোটা হয় তাহলে বসতে কিছুটা সমস্যা হয়। অর্থাৎ, পেছনে একপাশ উচু থাকে, আরেকপাশ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে থাকে। এতে মেরদুণ্ড অপ্রাকৃতভাবে বাঁকা হয়। এভাবে ক্রমশ হতে থাকলে পেশী ভারসাম্যহীনতা এবং ডিস্ক হার্নিয়েশনের মতো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি হতে পারে।
সায়াটিকা ও নার্ভ কম্প্রেশন: সায়াটিকা স্নায়ু আপনার পায়ের নিচে চলে। মানিব্যাগ পেছনে রেখে বসলে এই স্নায়ু সংকুচিত হতে পারে। ফলে ঝাঁকুনি, অসাড় ও ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ ধরনের পরিস্থিতি সাধারণ সায়াটিকা নামে পরিচিত। তবে তা বেদনাদায়ক ও দুর্বল হতে পারে।
পিঠের নিচের অংশে ব্যথা: মানিব্যাগ পেছনে রেখে বসলে যে অসমতা হয়, তা থেকে পিঠের নিচের অংশে ব্যথা হতে পারে। পিঠের একপাশের পেশীগুলো উত্তেজনাপূর্ণ ও অতিরিক্ত কাজ করতে পারে। আবার অন্যদিকের পেশীগুলো দুর্বল ও অব্যবহৃত থাকার আশঙ্কা থাকে। এ ধরনের ভারসাম্যহীনতা দীর্ঘস্থায়ী হলে ব্যথা হতে পারে।
সমাধান: মানিব্যাক পেছনে রাখার কারণে যে ধরনের সমস্যা হয়, তা থেকে মুক্তির সহজ উপায় হচ্ছে সামনের পকেটে মানিব্যাগ রাখা। এতে বসার ফলে কোনো ধরনের অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয় না এবং মেরুদণ্ডও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। আবার মানিব্যাগ যদি একান্তই পেছনের পকেটে রাখতে হয়, তাহলে এটি যতটা সম্ভব পাতলা রাখুন। মানিব্যাগে থাকা অপ্রয়োজনীয় কার্ড, কাগজপত্র ও রসিদগুলো সরিয়ে ফেলুন।