১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মাথা কাটার শতকে সৌদি আরব

সোমবার সিরিয়ার এক মাদক পাচারকারীর শিরশ্ছেদ করেছে সৌদি আরব। এ নিয়ে দেশটিতে গত মাত্র সাড়ে পাঁচ মাসে একশতম মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকর করা হল। এবছর শিরশ্ছেদের ঘটনায় রেকর্ড করেছে সৌদি সরকার। গতবছর দেশটিতে ৮৭ জনের শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল। এবার ছয় মাস না পেরোতেই এই সংখ্যা শতকের ঘর ছুঁয়েছে। অবশ্য দেশটিতে এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রেকর্ড নয়। ১৯৯৫ সালে সৌদি কর্তৃপক্ষ ১৯২ জনের শিরশ্ছদ করেছিল।

সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার তারা সিরিয়ার নাগরিক ইসমায়েল আল তাওয়ামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। ওই ব্যক্তির কাছে বিপুল সংখ্যক নিষিদ্ধ ঘোষিত অ্যাম্ফিটামিনবড়ি পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছিল সৌদি আদালত। সোমবার উত্তরাঞ্চলীয় জাওফ প্রদেশে তাকে শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল। এছাড়া এক সৌদিকে হত্যার ঘটনায় তায়েফ প্রদেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছেরামি আল খালদিকে।

সৌদি আরবে মাদক আর হত্যার অপরাধেই অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়ে থাকে। তবে বার্লিন ভিত্তিক সৌদি মানবাধিকার গোষ্ঠীর পরিচালক আলি আদুবিসি জানিয়েছে, অর্থনৈতিক কারণে দেশটিতে মাদক অপরাধ বেড়ে গেছে। দরিদ্র শ্রেণীর লোকজনই এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। সৌদি আরবের এই অধিক সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কেননা এই বিচারের নামে লোকজনের প্রাণনাশের এই বর্বেরোচিত পদ্ধতিটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ নিয়ে গোষ্ঠীগুলো তীব্র আপত্তি জানিয়েছে।

উপসাগরীয় দেশটিতে এখনো মাদক পাচার, ধর্ষণ, হত্যা, অস্ত্র লুট এবং ধর্ম ত্যাগের কারণে অনেক বিদেশি নাগরিককেও মৃত্যুদণ্ড সাজা দেয়া হয়ে থাকে। এ বছর খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড সাজা দেয়া হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার গৃহকর্মী সিতি জয়নাবকে । এ নিয়ে দু দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল। এ নিয়ে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিল জাকার্তা। চলতি বছর সৌদিতে যে ১শ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তাদের মধ্যে ১০ পাকিস্তানি এবং আট ইয়েমেনি। এছাড়া জর্দান, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, ভারত, চাদ, ইরেত্রিয়া এবং সুদানের নাগরিকও রয়েছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বিশ্বের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী সেরা পাঁচটি দেশের শীর্ষে ছিল সৌদিআরব। সে দেশে অভিযুক্তদের প্রকাশ্যে তরবারি দিয়ে শিরশ্ছেদ করা হয়ে থাকে। অ্যামনেস্টি বলছে, বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর তার উত্তরসূরি বাদশাহ সালমানের জমানায় দেশটিতে শিরশ্ছেদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে এটি বৃদ্ধি পাওয়ার বিশেষ কোনো কারণ উল্লেখ করেনি অ্যমনেস্টি।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ