ময়মনসিংহে প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক স্বপন ভদ্রকে (৬৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারাকান্দা উপজেলার শম্ভুগঞ্জ মাঝিপাড়া এলাকার নিজ বাড়ির পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাগর মিয়া (২০) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাগরের বিরুদ্ধে বখাটেপনা, মাদক বিক্রি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
স্বপন ভদ্র ময়মনসিংহের তারাকান্দা প্রেস ক্লাবের (একাংশ) সহসভাপতি ছিলেন। ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন ও নবকল্যাণ পত্রিকার ফুলপুর ও তারাকান্দা প্রতিনিধি হিসেবে একসময় কর্মরত ছিলেন সাংবাদিক স্বপন ভদ্র। নিজের ফেসবুক পেজে এলাকার নানা সমস্যা ও মাদক ব্যবসা নিয়ে লেখালেখি করতেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বিকেল ৩টার দিকে কোতোয়ালি পুলিশ হত্যাকারী সাগরকে গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের পাছার গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
কোতোয়ালি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শম্ভুগঞ্জ মাঝিপাড়া এলাকার বাসিন্দা স্বপন ভদ্র গতকাল সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের রঘুরামপুর টানপাড়া এলাকায় পত্রিকা পড়ছিলেন। খবর পেয়ে বখাটে ও মাদকসেবী সাগর দা নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সাগর পালিয়ে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় স্বপন ভদ্রকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরে তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সাগরের মাদক ব্যবসা নিয়ে স্বপন ভদ্র পত্রিকায় লেখালেখি করায় বছরখানেক আগেও একবার তাঁকে মারধর করা হয়। এরপর সাগরের সঙ্গে সালিস-দরবারে বিষয়টির মীমাংসা হয়। সেই বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
নিহত স্বপন ভদ্রের ভাগিনা মানিক সরকার বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যা, এলাকায় মাদক ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্বপন ভদ্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করতেন।
প্রতিবাদ জানাতেন। এরই জেরে তাঁকে প্রাণ দিতে হলো।
এদিকে পুলিশ সাগরকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা জব্দ করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন সাগর। গ্রেপ্তার সাগরের বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের পাছার গ্রামে। কিন্তু তিনি বসবাস করতেন শম্ভুগঞ্জের টানপাড়া এলাকার নানির বাড়িতে।
নির্মম এই হত্যার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান জানান, সাগর গ্রেপ্তার হয়েছেন। কী কারণে এমন হলো তা তদন্ত করা হচ্ছে।