মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে ভাসানী বিশ্ববিদালয় কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। মাজার প্রাঙ্গনে ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভাসানীর ভক্ত-অনুসারী ও মুরীদানরা আসে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে শ্রদ্ধা জানাতে ।
সকাল সাতটায় সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজারে ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিনের পুস্পস্তবক অর্পন মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন, ভাসানীর পরিবার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাসানীর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পন ও ফাতেহা পাঠ করেন। এ ছাড়া ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গনে কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করা হয়েছে যা দিনভর চলবে। এদিকে ভাসনী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে পাঁচ দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে।
মাজার প্রাঙ্গনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, ও মাওলান ভাসানী ফাউন্ডেশন আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
উল্লেখ্য, আফ্রো এশিয়া ল্যাটিন আমেরিকার অবিসংবাদিত নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহন করেন। তিনি নিপীড়ত নির্যাতিত মানুষের নেতা হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা সাংস্কৃতি ও কৃষি বিপ্লব ঘটানোর আন্দোলনে একাকার হয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের আতংকে পরিণত হয়েছিলেন। তার হুঙ্কার খামোশ শব্দটি আজো ঐতিহাসিকভাবে প্রতিধ্বনিত হয়।
মাওলানা ভাসানী তাঁর নির্লোভ সংগ্রামী জীবনে সুদখোর মহাজনদের বিরোদ্ধে আন্দোলন, শোষক জমিদারদের উচ্ছেদ, কৃষক সম্মেলন, বঙ্গীয় কৃষক খাতক আইন পাশ, সালিশী বোর্ড স্থাপনসহ নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাসের এমনকি স্বাধীনতার সংগ্রামেও রাখেন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন, ফারাক্কার লংমার্চ চির জাগরুক হয়ে আছে তার দূরদর্শিতার নিদর্শন হিসেবে। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন আলোকিত মানুষ গড়ার। তাই প্রত্যন্ত গ্রাম সন্তোষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পরিকল্পনাসহ ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়েছিলেন। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার সয়াধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করলেও জীবন সংগ্রামের বৃহদাংশ কাটিয়ে ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর অন্তিম শায়নেও রয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে।